অসুস্থ প্রথম স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে তার সেবা যত্ন করার জন্য গত চারদিন আগে দ্বিতীয় বিবাহ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলী খাঁন (৭৫)। এ নিয়ে এবং বাড়ির মধ্যে চারটি মেহগনি গাছ তিন হাজার টাকায় বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার মেঝ ছেলে রফিকুলের সাথে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এসময় বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ কুপিয়ে মারার হুমকি দেয় ছেলে রফিকুল। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ১৯ এপ্রিল (শুক্রবার) রাত আনুমানিক নয়টার দিকে রফিকুলের বাড়ির সামনেই নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ওই বৃদ্ধকে।
ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের শরণখোলায় খান্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য খোন্তাকাটা (ভাড়ানিরপাড়) এলাকায়।
সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আশিকুর রহমান, শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম কামরুজ্জামান খাঁন, ওসি তদন্ত রাধেশ্যাম সরকার, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খাঁন মহিউদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই রফিকুল নিখোঁজ থাকায় এলাকাবাসীর ধারণা নিহতের ছেলে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে।
এলাকাবাসী ও নিহতের বড় ছেলে মশিউর খাঁন জানান, উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের ভারানিরপাড় এলাকার বাসিন্দা মৃত আসমত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী খান গত চার দিন আগে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার পাটকেলপোতা গ্রামের চাঁন মিস্ত্রির মেয়ে মাজু বেগম (৪৫)কে বিবাহ করে বাড়ি নিয়ে আসে। এ নিয়ে সন্তানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এছাড়া বসত বাড়ির মধ্যে চারটি মেহগনি গাছ তিন হাজার টাকায় বিক্রির ঘটনায় রফিকুলের সাথে ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে রফিকুল তার বাবাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটার দিকে আকাশ টিভির কার্ড রিচার্জ করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের দোকানে যাওয়ার সময় রফিকুলের বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে খুন হয় মোহাম্মদ আলী।
নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী মাজু বেগম জানান, বাড়ির মধ্যে থেকে চারটি মেহগনি গাছ বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার তার স্বামীর সাথে মেঝ ছেলে রফিকুলের ঝগড়া হয়। ঐ সময় সে আমার স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং কুপিয়ে মারার হুমকি দেয়।
এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে এলাকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম কামরুজ্জামান খাঁন জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মশিউর বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে শীগ্রই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হবে।