শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছরের মতো এবারও অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর আলামপুর গ্রামের হাজেরা-খাঁ দীঘিতে; যা স্থানীয়ভাবে আজরাঈল দীঘি বলেই পরিচিত।
নীরব নিস্তব্ধ এই দীঘি এখন নানা রংয়ের পাখির কিচিরমিচির ধ্বনিতে মুখরিত। এ যেন এক নৈসর্গিক আবহাওয়া। গোধূলি শেষে যখন সূর্য ডুবু ডুবু অবস্থা, তখন মাথার ওপর দিয়ে উডে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। এদের কলকাকলিতে বিশাল দীঘি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। উড়ে গিয়ে বসে দীঘি পাড়ের বিভিন্ন গাছের ডালপালায়। রাতের বেলাও থাকে ওখানেই। এসব পাখি দেখতে সকাল-বিকাল দিঘীর এলাকায় অসংখ্যা দর্শনার্থী ভিড় করে।
গত বছরের চেয়ে এবার বিপুল পরিমাণ পাখির আগমনে তৈরি হয়েছে অন্য এক পরিবেশ। স্থানীয়রা বলছেন, এ সব অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙছে তাদের।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে অতিথি পাখি দেখতে এসেছি। এখানে আসলে খুবই ভালো লাগে। পাখির ডানা ঝাপটানো মুগ্ধ করছে আগত দর্শনার্থীদের। অনেকেই আবার মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত।
অতিথি পাখি দেখতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী শাহনেওয়াজুল ইসলাম তায়েফ জানান, পাখি এসেছে শুনে দেখতে এসেছি। অতিথি পাখির আগমনে জায়গাটির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। অপরূপ সুন্দর লাগছে পাখির অবাধ বিচরণ। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করতে পেরে খুশি সবাই।
পাখি দেখতে আসা মোজাম্মেল হক হাছান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমি প্রতি বছর এখানে বেশ কয়েকবার ঘুরতে আসি। বিশেষ করে শীতের সময়টা অনেক ভালো লাগে। অতিথি পাখিরা আসে, তাদের কিচিরমিচির শব্দ একটা সুরের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জহির উদ্দিন বলেন, গতকয়েক বছর ধরে এই গ্রামে এসব পাখি এই দীঘিতে আসে। এসব পাখির দৃশ্য আমাদের মনে আনন্দ দেন। আমরা আনন্দ পাই, কারণ এইরকম দেশি বিদেশি পাখির দৃশ্যে আর কোথাও দেখা পাওয়া যায়না। এরা এখানে অনেক নিরাপদে আছেন। এমন মনোরম দৃশ্যে আমাদেরকে মনোমুগ্ধকর করে তোলে। বিশেষ করে এই দীঘিতে পাখির একটি অন্যতম নিরাপদ আবাসস্থল হিসবে গড়ে উঠেছে তা না দেখলে বিশ্বাসই করা যাবেনা। এ দৃশ্যে উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজেরা-খাঁ দীঘিতে ছুটে আসে শত শত মানুষ।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা বলেন, অতিথি পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। কারও বিরুদ্ধে পাখি শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।