শিবচর পৌরসভার চৌধুরী ফাতেমা বেগম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত পিঠা উৎসব যেন বর্নিল রংয়ে মেতে উঠে গতকাল শুক্রবার। গভীর রাত পর্যন্ত ছিল প্রচণ্ড ভিড়।
পিঠা উৎসবে বিভিন্ন স্টলে ছিল গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী পিঠার বিশাল সমারোহ। নৌকা, কাঁটা পিঠা, পাটি সাপটা, ঝুরি পিঠা, ঠোস পিটা, দুধপুলি, ভাঁপাপিঠা, সইপিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা খেতে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ভিড় ছিল প্রতিটি স্টলে।
উৎসবকে ঘিরে হারিয়ে যাওয়া পালকি, ঢেকি,চালনাসহ হরেকরকমের আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতোন। পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি।
সরেজমিন জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে শিবচর পৌরসভার চৌধুরী ফাতেমা বেগম অডিটোরিয়ামে ১দিনের গ্রামীন ঐতিহ্য পিঠা উৎসবের আয়োজন করে উপজেলা ডায়াবেটিক সমিতি। উৎসবে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ৩৩ টি পিঠার স্টল অংশ নেয়। স্টলগুলোতে , পাটি সাপটা, ঝুরি পিঠা, ঠোস পিটা, দুধপুলি, ভাঁপাপিঠা, সইপিঠা, চিতই, দুধ চিতই, আপেল পিঠা, নৌকা পিঠা, ঝুড়ি পিঠাসহ দেশীয় নানা ধরনের পিঠার বাহারি সমাহার দেখা গেছে। দুপুরের পর থেকেই গ্রামীন ঐতিহ্যেও এই আয়োজন দেখতে অসংখ্য দর্শনার্থী পিঠা উৎসবে আসতে শুরু করে। বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে পিঠা খেতে দেখা গেছে অসংখ্য দর্শনার্থীদের। চলে রাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রির ধুম।
পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ য্বুলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, চিফ হুইপের সহধর্মিনী জিনাত পারভীন চৌধুরী , জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরী, ডায়াবেটিক সমিতির চেয়ারম্যান রাজিয়া চৌধুরী, মেয়র মো. আওলাদ হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ডা. মো. সেলিম প্রমুখ ।
অল্প মূল্যে গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী পিঠা কিনতে পেরে খুশি স্থানীয়রা। এছাড়াও চুড়ি,শাল, কসমেটিকসসহ নানান পন্য মিলে এখানে। চলে বাউল গান। ছিল হারিয়ে যেতে বসা ঢেকি,পালকি,গ্রামীন ঘরসহ বিলুপ্ত হতে যাওয়া অনেক জিনিসের সমারোহ। এবছরের ন্যায় প্রতি বছর কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীন এই ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব আয়োজনের দাবী স্থানীয়দের।
দর্শনার্থী রাবেয়া আক্তার বলেন, পিঠার যে এতো ধরন হতে পারে এখানে না আসলে জানতামই না। আমি খুবই মুগ্ধ এখানে এসে পিঠা খেয়ে। বাসার জন্যও নিয়েছি।
চাকরিজীবী হরেন সরকার বলেন, এখানে এসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হরেক রকমের পিঠা দেখে খুব ভালো লাগলো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হরেক রকমের পিঠা খেলাম। আয়োজকদের কাছে আমার একটাই দাবী যেন গ্রামীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর এমন পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
শিবচর ডায়াবেটিক সমিতির চেয়ারম্যান রাজিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন রকমের পিঠা ছাড়াও গ্রামীন ঐতিহ্য চুড়ি, মাটির হাড়িসহ মাটির জিনিসপত্র, পালকি, ঢেঁকিসহ বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। স্টলগুলোতে ঘুরে দেখেছি এখানে ৪২ প্রকারের পিঠা রয়েছে। প্রতিটি স্টলের নামকরন এক একটি পিঠার নামে করা হয়েছে। কারন দর্শনার্থীরা যাতে একবার হলেও পিঠার নামগুলো পড়ে। তাহলে অন্তত আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পিঠার নামগুলো তারা জানতে পারবে। এখানে পুরোনো ঐতিহ্যবাহী পিঠার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মানুষ যে ধরনের পিঠা করে যেমন একটু ফিউশন করে তৈরি পিঠাও রয়েছে। ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ খুব খুশি। আমরাও খুশি। প্রতি বছরই শিবচরে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh