দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে শক্তিশালী কোনো প্রার্থী না থাকায় একটু স্বস্তিতে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শহরে দুই একটি স্থানে দুই একজন প্রার্থী পোষ্টার চোখে পড়লেও কোন গ্রাম গঞ্জে অন্য কোন প্রার্থীর পোষ্টার চোখে পরে না। অপরদিকে প্রতীক বরাদ্ধের পর প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নির্বাচনী পোষ্টার দেখা যাচ্ছে। চলছে নির্বাচনী প্রচারনার মাইকিং। প্রতিটি ইউনিয়নে চলছে গ্রুপ ভিত্তিক ওঠান বৈঠক।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে প্রতীক প্রাপ্ত প্রার্থী রয়েছেন মোট ৬ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ মালেক (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনএম) মনোনীত খালেক দেওয়ান (নোঙ্গর), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী এম হাবিব উল্লাহ (গামছা), গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য), তৃণমূল বিএনপি’র মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ (সোনালী আঁশ) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল (লাঙ্গল)।
মানিকগঞ্জ ৩ আসন সাটুরিয়া উপজেলার ৯টি এবং মানিকগঞ্জ সদরের ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনটি ছিল মূলত বিএনপির দখলে । ১৯৯১ সন থেকে ২০০৬ সন পর্যন্ত ৫টি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জয়ী হন। ওয়ান এলিভেনের পরে ২০০০৮ সালে এ আসনে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টানা ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। মনোনয় পাওয়ার আগ থেকেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে গেছেন।
মানিকগঞ্জ পৌরসভা, সদর উপজেলার ৭ টি এবং সাটুরিয়া ৯টি ইউনিটসহ মোট ১৭টি প্রতিদিনই নির্বাচনী গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন দলিয় নেতারা। প্রতিদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একটি করে ইউনিয়নে একাধিক স্থানে পথসভা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সময়ে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আয়োজন করছেন নির্বাচনী সভা। সেখানে মন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা অংশ গ্রহণ করছেন।
এদিকে প্রতিক পাওয়ার পর পরেই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী জাহিদ মালেক তার নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও বাকী ৫ প্রার্থীদের কোন প্রচার প্রচারণা দেখা যায় নি। এ আসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল (লাঙ্গল) ছাড়া আর কোন প্রার্থীকে সাধারণ ভোটারগণ চিনেই না।
মফিজুল ইসলাম খান কামাল এ আসনে স্বাধীনতার পর প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রবীণ রাজনিতীবিদ। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে গণ ফোরামে যোগদান করেন। তাকে ৪০ উর্দ্ধো সকল ভোটার চিনেন। নতুন ভোটারদের তাকে অনেকেই চিনে না।
অপরদিকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল কে কিছুটা চিনেন। তিনি মানিকগঞ্জ -১ ও ৩ আসনেই প্রতিদন্ধীতা করছেন। মহাজোট থেকে মানিকগঞ্জ ১ আসনে তাকে নৌকার প্রার্থীর দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলে তিনি মুলত ঐ আসন নিয়েই বেশী ব্যাস্ত। ফলে মানিকগঞ্জ ৩ আসন নিয়ে জাহিদ মালেক স্বস্তীতে আছেন।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও ভোটের মাঠে কি করবে, সেটাও ঘোর পাক খাচ্ছে। যদি ভোটের হার কম দেখাতে সিদ্বান্ত নেন। তাহলে বিএনপির ভোটার কেন্দ্রে যাবে ন। আবার ভোট কেন্দ্রে গেলে সেই রিজার্ভ ভোট ত নৌকায় উঠবে না।
সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুখ খান মজলিশ মাখন বলেন, আমাদের বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১০-১৫ টি করে মামলা হয়েছে। ফলে আমরা এখনও ঘরে ফিরতে পারছি না
সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিগত যে উন্নয়ন করেছেন,স্বাধীনতার পর আর কোন এমপি তা করতে পারেন নি। তাই এবার আমাদের নেতা ৪র্থ বারের এমপি নির্বাচিত হবেন।
তবে সাধারণ মানুষ বলছেন ভিন্ন কথা,নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার বলেন, শহরে বিএনপির সমর্থকরা ভোট দিতে কেন্দ্রে না গেলেও গ্রামের মানুষ ভোট দিতে ঠিকই যাবে। তখন আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাড়া বাকী ভোট কিন্তু গনফোরামের সুর্য মার্কায় ভোট দিবে।
জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল বলেন, আমি ২ আসনে সমান তালে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও গণফোরামের মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য) বলেন, আমি মানিকগঞ্জ ও সাটুরিয়ার উপজেলার একাধিক স্থানে প্রতিদিনই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি ।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয় প্রাপ্ত প্রার্থী জাহিদ মালেক বলেন, বিএনপি এখনও নির্বাচন বানচাল করার পরিকল্পনা করছেন। তারা ট্রেন পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। নির্বাচন বন্ধ হলে দেশে অরাজাকতা সৃষ্টি হবে। তারা মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু মানুষ অত বোকা না। তারা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পূনরায় নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh