দ্বাদশ নির্বাচনে প্রশাসনসহ সবাই ভোট নিয়ে ব্যস্ত সময়টিকে কাজে লাগিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের সন্তোষপুর ডাঙ্গারপাড়া বড় নদীর পাড়ে মেশিন লাগিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছেন মোক্তার পাড়া গ্রামের নজির মিয়ার ছেলে শাহাজান (৫০) নামের এক প্রভাবশালী।
নদীতে মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মধ্যে পড়ছে নদীসহ আবাদি জমি। প্রশাসনের নাকের ডগায় সন্তোষপুর ডাঙ্গারপাড়া বড় নদীর পাড়ে ৬ রাত মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন উপজেলার মধুপুর, সন্তোষপুর ডাঙ্গারপাড়া নামক স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, নদীতে কোনো চর না থাকলেও মেশিন বসিয়ে দেদারসে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। বালু উত্তোলনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রভাবশালী শাহাজান তা মানেনি।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। অন্যদিকে, কালভার্ট, বসতবাড়ি, প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেতু এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্তোষপুর খামারপাড়া গ্রামের আতাউর রহমান জানান, ‘বড় নদীর পাড় স্থানের সন্তোষপুর আযানের পাড়া গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে কালু মিয়া ও মমিনপুর মোক্তার পাড়া গ্রামের নজির মিয়ার ছেলে শাহাজান মিয়া নদী থেকে এই বালু উত্তোলন করেছেন। জমিটি মোক্তার পাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার এছাড়া আর কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে সন্তোষপুর আযানের পাড়া গ্রামের কালু মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘ওই বালু আমি উঠাইনি। জমিটি মুক্তার পাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার। সে তার জমিতে বালু উঠাইছে।’
মোক্তার পাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘গতবার বন্যায় আমার জমি ভেঙে নদীতে পড়েছে। সেই গর্ত ভরাট করতে আমি ওই ওয়ার্ডের মেম্বারের সঙ্গে কথা বলে নদী থেকে মেশিন লাগিয়ে আমার জমিতে বালু উত্তোলন করছি গর্তগুলো ভরাট করতে।’
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি।’
বদরগঞ্জ থানার মধুপুর ইউনিয়নের বিট অফিসার এসআই মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘সন্তোষপুর গ্রামে আমরা কম যাই। নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি। বালু উত্তোলনের বিষয়ে কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজির হোসেন জানান, ‘আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’