সিরাজগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার মামলায় দুই যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এই কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চালা অফিসপাড়া মহল্লার হাজি মওলানা আব্দুল মুন্নাফের ছেলে আলামিন (৩৬) ও জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার পবাহার নয়াপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৭)।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি আলামিন ২০০৭ সালে গাজীপুর জেলার মাওনা চৌরাস্তায় একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। এ সময় শ্রীপুর থানার টেংরা গ্রামের বাদল মন্ডলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা ২০০৯ সালে গোপনে বিয়ে করেন। কিছুদিন শ্রীপুরের জীবন ভিলা মার্কেটে মনিরুজ্জামানের কাপড়ের দোকানে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে নাসরিন আক্তারের পরিবার ও স্বামী তাকে বুঝিয়ে আলামিনকে তালাক দেওয়ায়। এতে আলামিন নাসরিনের ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে আলামিন পুনরায় নাসরিনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। দুজনের সম্পর্ক নিয়ে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।আলামিন নাসরিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই আলামিন নাসরিনকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ডাকেন। নাসরিন তার ফুফু মেহেরুন নেছা ও ভাগনি জাইমাকে (৫) সঙ্গে নিয়ে আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার দোকানে যান। দুপুরে আলামিন, দোকান কর্মচারী নয়ন সরকার ও চালক রবিউল ইসলাম মিলে দোকানের পেছনে রেস্টরুমে নিয়ে একে একে বালিশ চাপা ও গলায় রশি পেঁচিয়ে তাদের হত্যা করেন।
পরে তিনজনের মরদেহ বস্তায় ভরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেছনে যমুনা নদীতে ফেলে দেন। পরদিন তাদের মরদেহ ভেসে উঠলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় এনায়েতপুর থানার এসআই আজগর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ তিনজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলা চলাকালে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ আদালত আলামিন ও রফিকুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। আসামি নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।