ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী ফাতেমা বেগম (৪৫) এর সন্তানের পিতৃপরিচয় জানালেও মেনে নিতে নারাজ অভিযুক্তের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু ফল আসেনি। ৯ বছরেও বাক প্রতিবন্ধী শিশু হাসান পাইনি তার পিতৃ পরিচয়।
হাটে বাজারে ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করা ফাতেমা বেগমের আকুতি শোনার কেউ নেই। পাশে কেউ না থাকায় গ্রহণ করতে পারেনি আইনি ব্যবস্থা। ফাতেমা বেগম বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের খালকুলা এলাকার আফসার খানের কন্যা।
সরেজমিনে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জরাজীর্ণ টিনের ঘরে প্রতিবন্ধী ফতেমার বসবাস। এ যুগে এমন ঘরে বসবাস করা পরিবারের খোঁজ মেলা ভার। পরনে আধা নোংরা কাপড়। আনমনে কি যেন বলেই চলছে। হাটে বাজারে ভিক্ষা করে চলে তার দিন। পিতৃ পরিচয়হীন শিশু হাসানকে নিয়েই থাকেন এ বাড়িতে। নিতান্ত অভাবে পড়লে প্রতিবেশীর কাছ থেকে খাবার সংগ্রহ করে দিন পার করেন তিনি।
তারা আরও জানায়, তার স্বামী খুলনা থাকে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর থেকে সে গর্ভবতী হয়। ফাতেমার মাধ্যমেই আমরা জেনেছি বাচ্চাটা সারোয়ারের। বাচ্চা প্রসবের পরে স্থানীয়ভাবে ও ইউনিয়ন পরিষদে এ বিষয়ে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সে অসহায় বিধায় আইনের শরণাপন্ন হতে পারেনি। তাছাড়া প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কোথাও কোন বিচার পাইনি ফাতেমা বেগম।
ফাতেমা বেগমের কাছ থেকে যতদূর জানা যায়, পাশের বাড়ির ট্রাক ড্রাইভার মৃত গফুর শেখের ছেলে সরোয়ার শেখ একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। তার স্ত্রী বাপের বাড়ি বেড়াতে গেলে হাঁস-মুরগি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যেতেন তাকে। সেই সুযোগে ধর্ষণ করত সরোয়ার। ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করা হতো। বাচ্চা প্রসব করার পরে ধর্ষণের বিষয়ে জানাজানি হলে অনেক দেন দরবারের পরেও বাচ্চার পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সরোয়ার শেখ।
সরোয়ার শেখের ভাই দেলোয়ারের শেখ বলেন, তার স্বামীর সাথে ২০-২২ বছর ধরে সম্পর্ক নাই। কে তার ঘরে গেছে আমি জানিনা। তবে একটা বাচ্চা হয়েছে। সেও বাক প্রতিবন্ধী। আমি চাই ওই ছেলে তার পিতৃপরিচয়ে বড় হোক।
স্থানীয় আকব্বার ডাকুয়ার স্ত্রী মালা বেগম বলেন, ফাতেমা একটা বলদ প্রতিবন্ধী মানুষ, ওর ঘর থেকে পানি পড়ে, একা বাড়ি থাকে। বাজারে ভিক্ষা করে। আমরাও তাকে সহায়তা করি। তার সাথে যে এ কাজ করেছে সে একজন জঘন্য ব্যক্তি। চেয়ারম্যান সাহেব সালিশ করেছে তবে মীমাংসা হয়নি। একমাত্র ডিএনএ টেস্ট ছাড়া আর কোন সমাধান নাই।
অনেক চেষ্টা করা হলেও সরোয়ার শেখের সাথে দেখা বা কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, রাস্তার পাশে এই পাগলীর ঘর, অনেক লোক তার কাছে এসেছে। অন্য কারো বাচ্চা হয়তো সে তার গর্ভে ধারণ করেছে। সে আমার স্বামীর নামে মিথ্যা কথা বলছে ওই বাচ্চা আমার স্বামীর ঔরষের না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাঈদ এস্কেন্দার বলেন, রাস্তার পাশেই বাড়ি, পাগল মানুষ। কখন কে কি করেছে বোঝা মুশকিল। তবে এটা সামাজিক অপরাধ। ফাতেমা বেগম সারোয়ারকে অভিযুক্ত করে। প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। আমিও চাই ছেলেটা বাবার পরিচয়ে বড় হোক। আমি আইনগতভাবে সকল সহযোগিতা করবো। ডিএনএ টেস্ট করা হলেই সমাধান হয়ে যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh