আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটভুক্ত সমমনা দলগুলো।
আর তাই নির্বাচনের আগ মুহুর্তে জমে ওঠেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন রাজনীতি। বিশেষ করে বরিশাল সদর-৫ আসনে মনোনয়ন রাজনীতি ক্রমশই জটিল হচ্ছে।
কারণ মনোনয়ন ফরম বিক্রির তৃতীয় দিনে আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এ আসনে ফরম জমা দেননি বলে জানা গেছে।
তার ওপর মনোনয়ন নিশ্চিত হতে জোর লবিং চলছে বরিশাল সদর আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম এবং বরিশাল সিটির সদ্য সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর। এ লড়াই যেন তাদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। আবার তাদের বাইরেও মনোনয়ন দৌড়ে সামিল হয়েছেন আরও ৭ জন নেতা।
ফলে শেষ মুহূর্তে এসে মনোনয়ন রাজনীতির সমিকরণ অনেকটা জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মনোনয়ন যেই তুলুক শেষ পর্যন্ত নৌকার মাঝি জাহিদ ফারুক শামীম অথবা সাদিক আবদুল্লাহ-ই হবেন বলে ধরে নিয়েছেন তাদের সমর্থক নেতা-কর্মীরা।
জানা গেছে, ‘সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়ন আবেদন ফরম তুলেছেন। এর একদিন পরেই বরিশাল সদর আসনে তার নামে আরও একটি মনোনয়ন ফরম তোলা হয়। এরপর থেকেই বরিশালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন আলোচনা শুরু হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বরিশাল সদর আসনের জন্য তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি বলে জানা গেছে।
যদিও আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের দাবি বিশেষ সুবিধা নিতেই বরিশাল সদর আসনে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামে মনোনয়ন ফরম তোলা হয়েছিল। এমনকি একটি গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ‘বরিশাল সদর আসনে তাঁর নাম দিয়ে কোন এক শুভাকাক্ষী মনোনয়ন ফরমটি তুলেছিলেন।
অপরদিকে, সদর আসনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি নিয়ে বুধবার রাত থেকেই নানা প্রচার-প্রচারণা চলছে। অনেকে ফেসবুকে কৌশলী স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন।
এমনই কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল সদর আসনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম। সোমবার রাতে বিষয়টি নিয়ে দলের সভাপতির সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁর। এরপর ওই রাতেই সরাসরি বরিশালে ফিরে আসেন প্রতিমন্ত্রী। তবে এমন গুঞ্জন রাজনীতির মাঠ ঘোলা করা ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে মনে করছেন অনেকে।
আবার অপর পক্ষের কয়েকজন দুজন সমর্থক জানান, ‘সদ্য সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়। নগরজুড়ে তার জনপ্রিয়তা থাকতেও গত সিটি নির্বাচনে রাজনৈতিক কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে তাঁকে। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তার মূল্যায়ন করা হবে। তাছাড়া সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নের বিষয়ে সবুজ সংকেট এসেছে। সংকেত পেয়েই গত সোমবার বরিশাল মহানগর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ যৌথসভা করেছে। সেখানে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘কোন কারণে আলোচনায় থাকা জাহিদ ফারুক শামীম এবং সাদিক আবদুল্লাহ বাদ পড়লে ভাগ্য খুলে যেতে পারে আলোচনায় থাকা মনোনয়ন প্রত্যাশী বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টুর। কেননা তৃণমূল পর্যায়ে এদের জনপ্রিয়তা যেমন রয়েছে তেমনি রাজনৈতিক দূরদর্শীতা এবং নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে তাদের।’
জানা গেছে, বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন ফরম তুলেছেন ১০ জন। তবে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত কে হবেন বরিশাল সদরে নৌকার মাঝি, সেটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২৫ এবং ২৭ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা পর্যন্ত।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
