রংপুরে বিস্ফোরক আইনে পুলিশের দায়ের করা মামলায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডন ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ ৫ নেতাকর্মীকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।
সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -১ম আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কান্ত রায় এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডন আদালতের কাঠগড়ার ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ জহির আলম নয়ন ও জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি তারেক হাসান সোহাগ ও যুবদল কর্মী আরিফ হোসেন।
এ মামলায় মোট সাতজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রংপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রইচ আহমেদ ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক ঝন্টু বেঁচে নেই। মৃত্যুর কারণে ওই দুই আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৯ মে বিএনপির হরতাল-অবরোধ চলাকালে রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্নে আসামিরা বিভিন্ন পটকা বোমা জাতীয় বিস্ফোরসহ নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একত্রিত হয়। সেখানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামিদের হাতেনাতে আটক করাসহ ৫৬টি পটকা বোমা উদ্ধারসহ জব্দ করেন। এ ঘটনায় তৎকালীন কোতয়ালী থানার এসআই চন্দন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে মামলার সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার আদালতের বিচারক ৫ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আফতাব হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষী উপস্থাপন করেছে আদালতে তারা ভিন্ন ভিন্ন সাক্ষ্য দিয়েছে। কাজেই এটা বোঝা যায় একটি সাজানো মামলা। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতে এই রায়ে জাতি হতবাক হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথাও জানান তিনি।