× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বরিশাল সিটি নির্বাচন: আশার বিপরীতে শঙ্কা নিয়ে ভোটের অপেক্ষা

বরিশাল ব্যুরো

০৯ জুন ২০২৩, ০৮:২৩ এএম

বরিশাল নগরীর আনাচে কানাচে সবখানেই নির্বাচনী ডামাডোল। চারিদিকে চোখ বুলালেই প্রতীকের ছবির ছড়াছড়ি। প্রার্থীদের শেষ প্রচারণা আর মাইকিংয়ে দিনভর সরগরম হয়ে উঠছে গোটা বরিশাল নগরী।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর আশাবাদ আর ভোটের পরিবেশ নিয়ে তার প্রতিদ্বন্ধি ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী ফয়জুল করীম, জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস, স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনের শঙ্কার মধ্য দিয়ে আজ মধ্যে রাতে শেষ হচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা।
কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত এই নগরীতে মেয়র ও কাউন্সিলর বেছে নিতে আগামী সোমবার (১২ জুন) ভোট দেবেন ভোটাররা।
শেষ সময়ের প্রচার আর গণসংযোগের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের দেখা গেছে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাতে। দিনের পুরোটা সময়ই ভোট চেয়ে প্রতীকের পরিচিতি জানিয়ে প্রার্থীদের পক্ষে চলছে মাইকিং। পোস্টারে ছেয়ে যাওয়া বরিশালে মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (জাপা), স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনের প্রাধান্য ছিল বেশি, তার সঙ্গে ৩০ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিল প্রার্থীরা ছিলেন সমানে সমান।
প্রচারের শেষ সময়ে ভোটারদের উপস্থিতি ও ভোটের পরিবেশ নিয়ে আশার কথা বলছে নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তার পক্ষে শেষ সময়ে কর্মী-সমর্থকদের সাথে প্রচারণায় যোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অন্য মেয়র প্রার্থীরা শেষ সময়ে গণসংযোগে নেমেছেন সর্ব প্রস্তুতি নিয়ে। শেষবারের মতো ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন ভোট প্রার্থনার জন্য।
শেষ প্রচারে ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে ছুটে বেড়ানো ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম ও জাপা প্রর্থী ইকবাল হোসেন তাপসের মুখ থেকে এসেছে শঙ্কার কথা। বিএনপির ভোট বর্জনের মধ্যে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, প্রতীক পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি। ইতিমধ্যে তিনি বিএনপি থেকে স্থায়ী বহিস্কার হয়েছেন। হাতপাখা প্রতিকে ইসলামী আন্দোলন মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করিমের পেছনে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে রয়েছেন তার দলের কর্মী-সমর্থকরা। 
বরিশাল সিটি করপোরেশনের নতুন নগর পিতা বেছে নিতে ভোট দেবেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটার। নগরীর ৩০ টি ওয়ার্ডের ১২৬ টি কেন্দ্রে ৮৯৪ কক্ষে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনও ভোটের জন্য প্রস্তুতির কাজ চালাচ্ছে জোরেশোরে। প্রার্থীদের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের মধ্যে তারা পরিস্থিতি করছেন পর্যবেক্ষণ।
শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলেছি, আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপক্ষে একটি নির্বাচন উপহার দেবো। সেই পথেই আমরা এগুচ্ছি। 
শেষ সময়ের প্রচার ॥ তফশিল অনুযায়ী শনিবার রাত ১২টায় বরিশাল সিটি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে। বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় আর কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ প্রস্তুতির কাজ চলবে। ইতিমধ্যে যা শুরু হয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত ভোটে প্রচার-প্রচারণা আর গণসংযোগে জমজমাট ছিল পুরা বরিশাল নগরী। ভোটের আগে আজ ছিল শেষ জুমার নামাজ। আর তাই এই জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে মসজিদ কেন্দ্রিক প্রচারণায় সরব ছিল মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীসহ কর্মী-সমর্থকরা।
শুক্রবার (০৯ জুন) নামাজ আদায় শেষ কর্মীরা যেমন মসজিদের সামনে লিফলেট বিলি করেছেন। তেমনি প্রার্থীরাও চেষ্টা করেছেন নামাজের খুতবা শেষে নিজের কথা ভোটারসহ নগরবাসীর সামনে তুলে ধরতে। আবার অনেকে মসজিদে নেতা-কর্মীরাও তুলে ধরেছেন ভোটারদের সামনে প্রার্থীর বার্তা।
বরিশাল নগরের বিবির পুকুরের পূর্ব পাড়ে কোর্ট মসজিদে নামাজ আদায় শেষে ভোটার জিয়াউল করিম জানান, নামাজ আদায় শেষে দেখলাম নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা লিফলেট দিচ্ছেন। আবার একটু সামনে চকবাজারের জামে এবায়েদুল্লাহ মসজিদের সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর লিফলেট বিতরণের দৃশ্য।
বাকসুর ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ মুন্না জানান, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নগরের চৌমাথা এলাকার মারকাজ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। সেখানে তিনি ভোটারসহ মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে সেখানে থেকে বের হয়ে নগরবাসী ও সমর্থকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এছাড়া তিনি চাঁদমারিস্থ বঙ্গবন্ধু কলোনিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়াও জুমার নামাজ শেষে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে নগরীর নতুল্লাবাথ,রুপাতলী ও চৌমাথা এলাকায় নির্বাচনীয় প্রচারণায় অংশ নিয়েছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের নির্দেশনায় নৌকা প্রতিককে বিজয়ী করতে প্রচারণায় অংশ নেয় তারা। এতে কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো.তরুন সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বদু, আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গির হোসেন মোল্লা, মনিরুজ্জামান মানিক, সিকদার মোঃ কাজল, মুক্তিযোদ্ধা সালেহ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম অংশ নেয়। 
অপরদিকে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করীম নগরের চকবাজারস্থ জামে এবায়েদুল্লাহ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। সেখানে তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু কলোনিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন ।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস নগরের জামে কসাই মসজিদে, টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন মুসলিম গোরস্থান সংলগ্ন জামে মসজিদে, হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান নগরের মহাবাজ এলাকার একটি মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ আদায়ের পূর্বে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি নামাজ আদায় শেষে ওই এলাকায় গণসংযোগও করেন তারা। এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীরা স্ব-স্ব ওয়ার্ডের মসজিদে নামাজ আদায় করে নিজেদের পক্ষে মুসল্লিদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগ ॥ নির্বাচনে অপরাধ রোধ ও আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রনে ম্যাজিষ্ট্রেরিয়াল দায়িত্ব পালনের জন্য ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১০ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তারা নগরীর ৩০ ওয়ার্ডে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের তাৎক্ষণিক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা ও মিডিয়া সমন্বয়ক মো. মনিরুজ্জামান। 
তিনি আরও জানান, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী হাকিম ও তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন।
বিসিসি নির্বাচনের কেন্দ্রে ক্যামেরা স্থাপন চলছে ॥ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে সব কেন্দ্র ও কক্ষে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে। বুধবার (৭ জুন) থেকে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে, আগামীকাল শনিবার (১০ জুন) শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। 
এই তথ্য জানিয়েছেন ক্যামেরা স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক ও নেছারবাদ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিন শরীফ। তিনি বলেন, গত বুধবার থেকে বরিশাল সিটি নির্বাচনের ১২৬ কেন্দ্রে সিসি টিভি কামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।  আগামী শনিবারের মধ্যে ক্যামেরা স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে। রোববার ট্রায়াল দেওয়া হবে। তিনি জানান, নির্বাচনে ৮৯৪ টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহন করা হবে। প্রতিটি ভোট কক্ষে একটি করে এবং প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশ পথে দুইটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এতে মোট ১ হাজার ১৪৬ টি ক্যামেরা থাকবে। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.