× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বরিশাল সিটি নির্বাচন: উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ভোটের মাঠ

বরিশাল ব্যুরো

০৮ জুন ২০২৩, ০৬:০৯ এএম

সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তাপ বাড়ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীকে পিস্তল উচিয়ে হুমকি, উঠান বৈঠকে হট্টগোল, কর্মীদের মারধর, নির্বাচনী কাজে বাধাসহ নানান অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তিন মেয়র প্রার্থী তাপস, ফয়জুল ও রুপন সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই।

তারাও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী নামানোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া কালো টাকা ও বহিরাগতের আনাগোনা বাড়ছে বলে দাবি করেছেন লাঙলের মেয়র প্রার্থী তাপস।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকলে তারা নির্বাচনী কার্যক্রম করছেন কিভাবে? তাদেরতো কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমরা আইন অনুযায়ী এসব ঘটনার ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামী ১২ জুন বরিশালে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবো। 

সূত্রমতে, ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দের পর এক সপ্তাহ পরিবেশে সুষ্ঠু থাকলেও ২ জুন রাতে ২ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ১০ ওয়ার্ডে নৌকার উঠান বৈঠক পণ্ড হয়। এই বৈঠকে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী এটিএম শহিদুল্লাহ কবির ও জয়নাল আবেদিনের সমর্থকরা মারামারি ও চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি করেন। এই ঘটনায় দুই পক্ষের ১০ কর্মী আহত হন।

গত ৪ জুন (রোববার) দুপুরে নগরীর আলেকান্দায় ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শাকিল হোসেন পলাশকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি, মারধরের অভিযোগ উঠে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াদ হোসেন সাজনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পরের দিন কোতয়ালি মডেল থানায় ১০ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামিকে করে মামলা করেন কাউন্সিলর প্রার্থী পলাশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার সাজনের সমর্থক বাবুনি ও তুহিন গ্রেফতার হয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও করেছিলো পলাশের সমর্থকরা।

একই দিন নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাশিপুরে হাতপাখার প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে নৌকার কর্মীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মিছিল করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কালাম মোল্লাসহ তার নেতাকর্মীরা হাতপাখার মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীমের পিছু নিয়ে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় কালাম মোল্লাকে ডেকে সতর্ক করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। 

ওইদিন দুপুরে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাফিন মাহমুদ তারিকের প্রচারণায় হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি সাফিন মাহমুদের বিরুদ্ধে নৌকার পোস্টার ছেড়ার অভিযোগ করেন। এ নিয়ে দুপুরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন দুই প্রার্থী। এ সময় শরীফ মো. আনিছুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ঢাকা বসে হাতপাখাকে ৩ কোটি টাকা দিয়েছেন এবং আমরা যে ১০ জন কাউন্সিলর রয়েছি তার প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন করে প্রার্থী দিয়েছেন। তাদের নির্বাচনী খরচ ৩০ লাখ টাকা ইতোমধ্যে পেমেন্ট হয়ে গেছে। এসব করেছেন যাকে আমরা রাজনৈতিক অভিভাবক বলি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সাদিক আব্দুল্লাহ।’ তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই তাকে বহিষ্কার করা হয়।

এই মন্তব্যের পর বুধবার দুপুরে (৭ জুন) আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর সমর্থক আরিফুর রহমান।

বুধবার দুপুরে থানার বাইরে কর্মীকে প্রাণনাশের হুমকি ও কোতয়ালী মডেল থানা কম্পাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনোয়ার হোসেন রয়েলসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি-মারামারি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ঠেলাগাড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী জাকির হোসেন ভুলুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই দিন রাতে বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন রয়েল। 

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ভোটের মাঠে এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা রয়ে গেছে। এই শঙ্কা দিন দিন ঘনিভূত হচ্ছে। এই নির্বাচন কারচুপির দিকে এগুচ্ছে। আমরা শঙ্কিত, তাই নির্বাচনের মাঠে সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ চাই। 

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের দাবি, সরকার যদি গোপন ও প্রকাশ্য শক্তি ব্যবহার না করে, উৎসবমুখর পরিবেশে যদি জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে হাতপাখা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে। 

নির্বাচনে শঙ্কা প্রকাশ করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী দেয়ালঘড়ি প্রতীকের কামরুল আহসান রুপন বলেন, এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই নৌকা মেয়র প্রার্থী। তাই আমি আশা করবো তিনি যেনো প্রশাসনকে ব্যবহার না করেন। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়। আমি মনে করি নির্বাচনের মাঠে সরকার দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সবার সমান অধিকার রয়েছে। আমি আশা করবো এই নির্বাচনে বাধা দিতে সরকার যেন প্রশাসনকে ব্যবহার না করে। 

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, প্রার্থীদের কোনো কাজে কেউ বাধা দিয়েছে? দেয়নি। নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকলে প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন কিভাবে? কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সেই ঘটনাগুলোর প্রত্যেকটির আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্তদের সর্তক করা হয়েছে, পাশাপাশি মুচলেকাও দিয়েছেন। আমি প্রথম থেকেই বলেছি, আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপক্ষে একটি নির্বাচন উপহার দেবো। সেই পথেই আমরা এগুচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নে আমরা শতভাগ প্রস্তুত। 

আগামী ১২ জুন নগরীর ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৫৮ বর্গকিলোমিটারের এই নগরীতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন। এছাড়া পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.