কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ইউনিয়নের উত্তর কুড়িমাড়া গ্রামের শামছুদ্দিনের পরিবারে পাঁচজন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে কঠিন বাস্তবতায় দিনাতিপাত করছেন। জন্মের সময় থেকে কৈশোর পর্যন্ত সকলের শারীরিক গঠন ও চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করা যায়নি কিন্ত ১৩-১৪ বছর বয়স হওয়া মাত্রই কোমরের নিচ দিক অবস হয়ে পড়ে আর তখনই চলাফেরায় অক্ষম হয়ে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়। এমনি পরিস্থিতে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে সরেজমিনে কথা হয় ওই পরিবারের সাথে। শামছুদ্দিনের স্ত্রী নুরজাহান এ দম্পত্তির পাঁচ ছেলে, এক মেয়েসহ তাদের সংসারে ১৩ জন সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে চার ছেলে যথাক্রমে মো. নয়ন মিয়া (৩৫), মো. রাজিব মিয়া (২৮), মো. নাজমূল মিয়া(২৪), মোছা. খাদিজা(২০), মামুন মিয়া (১৬) শারীরিক গঠন সুঠাম দেহের অধিকারী হলে ও হামাগুরি দিয়ে চলতে হচ্ছে। এতে করে তারা স্বাভাবিক জীবন যাপনে কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
বিশাল এ সংসারে সরকারি সহায়তা বলতে নামে মাত্র প্রথম তিনজন সামন্য প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া আর তেমন কিছুই জুটছে না। পাঁচজনের মধ্যে একটি মাত্র হুইল চেয়ার কিছু দিন আগে প্রবাসিদের অর্থায়নে কিনে দেওয়া হলেও অন্যদেরকে হুইল চেয়ারের অভাবে হামাগুড়ি দিয়েই চলতে হচ্ছে, টাকার অভাবে তাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
প্রতিবন্ধী নয়ন মিয়া ঠাডারকান্দা বাজারে আরিফ মিয়ার দোকানে সাইকেল মেরামতের কাজ করেন। এছাড়া প্রতিবন্ধী রাজিব বাড়ির পাশে ছোট একটি মনিহারি দোকান দিয়ে বসে থাকেন। অর্থ সংকটের কারণে দোকানেও মালামালের স্বল্পতা রয়েছে।
তাদের দাবি, সাংবাদিকদের লেখনীতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। তিনি অনেক মানবিক কাজেই এ সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা পেলে তাদের এ সংসারে আর কোন দুঃখ-দুর্দশা থাকবে না বলে দৃঢ় বিশ্বাস।
পরিবারটি এলাকার সংসদ সদস্যসহ সকল জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. এহসানুল হক জানান, মামুন (১৬) ও খাদিজা (২০) তাদের সুবর্ণ কার্ড করার পর ভাতার জন্য আবেদনের সময় চলে যাওয়ায় এ দু’জনের এখনো ভাতার ব্যবস্থা হয়নি।
হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকুর সাথে এদের চিকিৎসার বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিলো না; যেহেতু আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। অচিরেই তিনি জেলা সিভিল সার্জন মো. সাইফুল ইসলাম ও বিশেষজ্ঞ চিকিসকের সাথে কথা বলে এ পরিবারের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মণ্ডল জানান, একই পরিবারে পাঁচ প্রতিবন্ধীর জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।