দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। যেদিকে তাকাই শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ। তবে পেঁয়াজের সবুজ অরণ্য ভেদ করে মাঝে মাঝে চোখে পড়ে হলুদ সরিষা ফুল। সেটাও হাতে গোনা। উপজেলার মোট আবাদী জমি প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। মোট জমির প্রায় ৯০ ভাগ জমিতে চাষ হয়েছে পেঁয়াজের। উর্বর জমি হওয়ায় পেঁয়াজের ফলনও বাম্পার। বর্তমানে পেঁয়াজ ক্ষেত পরিচর্চা, ঔষধ ও কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০৩৯৫ হেক্টর, হালি পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা মিলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে প্রায় ১১হাজার হেক্টর। মৌসুমের শুরুতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষেও কৃষক লাভবান হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে মার্চের মাঝামাঝি থেকেই নতুন হালি পেঁয়াজ উঠাতে শুরু করবে কৃষক। পেঁয়াজ চাষিদের সেবার মান বাড়াতে কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় মাঠে কৃষকের পাশে রয়েছে।
কয়েকজন পেঁয়াজ চাষির সাথে কথা হলে তারা জানায়, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের হালি চারা রোপণে তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। তবে আনুসঙ্গিক বিভিন্ন কারনে উৎপাদন ব্যায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁঁয়াজ মৌসুমের শুরুতে সরকার যদি কোন পেঁয়াজ আমদানি না করে তাহলে কৃষক পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবে। তবে বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের যে দাম রয়েছে তা কৃষকের জন্য অলাভজনক।
প্রতি শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষে মোট খরচ হয় প্রায় ১২শ টাকা এবং প্রতি শতকে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৪০ থেকে ৬০ কেজি। মৌসুমে যদি পেঁয়াজের দাম ১৫ শত টাকার উপরে না থাকে তাহলে পেঁয়াজ চাষে কৃষক আগ্রহ হারাবে। আবার মৌসুমের শুরুতে পেঁয়াজ আমদানি করলে দাম কমে যায় সেক্ষেত্রে কৃষক ক্ষতির মধ্যে পড়ে। তাই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিসহ উপকরণ ও পেঁয়াজ আমদানি না করার কথা বলেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদন এবার লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষক পর্যায়ে নিড়ানি, আগাছা পরিষ্কার, সেচ, বালাই ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন আন্ত:পরিচর্যা বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ পরামর্শ প্রদান করছেন। পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা গেলে কৃষকেরা মসলা জাতীয় এ ফসলটি চাষে আরও আগ্রহী হবে যা স্থানীয় চাহিদা মেটানো ও আমদানী ব্যয় হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।