দিনাজপুরে ৬ বছরের নিজ কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে মা সাদিয়া আক্তার আশাকে বিচারক দোষী সাবাস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন।
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় দিনাজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. যাবেদ হোসেন আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর মামলার দণ্ডিত আসামিকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রবি জানান, এ মামলার এজাহার থেকে তিনি জানান, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের এরশাদ আলীর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার আশা ২০১৭ সালের ৬ জুলাই মধ্যে রাতে নিজ বাড়িতে পারাবারিক কলহের সূত্র ধরে তার ৬ বছরের শিশু কন্যা মাইমুনা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর সাদিয়া নিজে হাত-পা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। নিজের হাত-পা কাটার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মা সাদিয়া। পর দিন ৭ জুলাই সকালে বাড়ির লোকজন সাড়া না পেয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শিশু সন্তানের মৃতদেহের পাশাপাশি সাদিয়াকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে। জ্ঞান ফেরার পর সে নিজ সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
ঢাকায় আনসার ব্যাটেলিয়ানে চাকরির সুবাধে স্বামী এরশাদ আলী সে সময় বাসায় ছিলেন না। পারিবারিক কলহের কারণে শিশুকন্যাকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে সাদিয়ার স্বামীর বড় ভাই ইব্রাইম আলী বাদী হয়ে গৃহবধূ সাদিয়াকে আসামি করে পার্বতীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সূত্র জানায়, মামলাটি পার্বতীপুর থানার পুলিশ তদন্ত করে গৃহবধূ সাদিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার কাজ শুরু হয়। বিচার আমলে বাদীপক্ষে ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে বিচারক আসামিকে দোষী সাবাস্তে রায় ঘোষণা করেন। মামলাটি বাদীপক্ষে পিপি মো. রবিউল ইসলাম এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাতব উদ্দীন পরিচালনা করেন।