× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে দৃষ্টিনন্দন জনপদ শিবচর

মাদারীপুর প্রতিনিধি

০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩:০৪ এএম

১৯৭১সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে ভাষণ উচ্চারনের সাথে সাথে সারা দেশের ন্যায় শিবচর প্রস্তুত হতে থাকে চুড়ান্ত যুদ্ধের জন্য। ২৬ মার্চ ১৯৭১ সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হলে শিবচরের দামাল ছেলেরা ঐতিয্যবাহী নন্দকুমার ইনিষ্টিটিউটে একত্রিত হয়ে যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে ২০ জনের প্রথম দলটি মাদারীপুর হয়ে আসাম সেক্টরের হিমালয়ের পাদদেশে অম্পিনগর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে শিবচর ত্যাগ করেন।

১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর শিবচরের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ শিবচর থানা আক্রমণ করেন। ২৫ নভেম্বর ১৯৭১ সালে সন্ধ্যার পর শিবচর পাকিস্থানী বাহিনী মুক্ত হয়। শিবচরের উল্লেখযোগ্য সম্মুখ সমরের মধ্যে রয়েছে শিবচর থানা আক্রমণ, শিরুয়াইল গানবোট আক্রমণ, দত্তপাড়া আক্রমণ। ১৯৭১ সালের ১৬ মে হাতিরবাগান মাঠে স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতারা মিটিং করে শিবচরে পাকিস্থানী বাহিনী আসবেনা বলে আশ্বস্ত করলো পরের দিন শতাধিক হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ করে। পাকিস্থানী বাহিনীর হিস্রতার চিহ্ন রয়েছে চরশ্যামাইল, গুয়াতলা বাহেরচর উমেদপুরসহ শিবচরের সর্বত্র। শিবচরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অন্যতম শহীদ সালাম, শহীদ দেলোয়ার, শহীদ জাহাংগীর, শহীদ ফিরোজ খান, শহীদ আজিজ।

জানা যায়, ভৌগলিক কারণে পদ্মা সেতু সংলগ্ন দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাটি বহুল পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই উপজেলার বীর সন্তানদের রয়েছে অনন্য অবদান। বঙ্গবন্ধুর বড় বোন চৌধুরী ফাতেমা বেগমের ছেলে তৎকালীন প্রাদেশিক সরকারের এমপি ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী দাদাভাই ছিলেন মুজিব বাহিনীর কোষাধ্যক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। বড় বোনের বাড়ির সূত্র ধরে শিবচরে বঙ্গবন্ধুর নিয়মিত পদচারণা ছিল। দাদাভাইয়ের নির্দেশনাতেই শিবচর থেকে পার্শ্ববর্তী ৯ উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা হয়।

উপজেলাটিতে ঢুকতেই একের পর এক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, সেতুগুলোতে লাল সবুজের রঙে ঢাকা রয়েছে। এছাড়াও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ হাসিনা, দাদা ভাইয়ের ম্যুরালও রয়েছে বেশ কিছু স্থানে। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল শেখ হাসিনা সড়কের বিজয় চত্ত্বর, বরহামগঞ্জ চত্ত্বর, ৭১ চত্ত্বর, চৌধুরী ফাতেমা বেগম পৌর অডিটোরিয়াম, আওয়ামী লীগ কার্যালয়, উপজেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী কলেজসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়াও প্রবাহমান ৭১ ভাস্কর্য, স্বাধীনতা স্তম্ভ, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ, মুক্তবাংলা, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভ নামক অসংখ্য ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। নির্মাণ করা হয়েছে লাল সবুজে ঘেরা সড়ক ৭১। বিভিন্ন রাস্তা ঘাট শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামকরণ, স্কুলের বিভিন্ন ভবন মুক্তিযোদ্ধাদের নামকরণ, বিভিন্ন সেতু মুক্তিযোদ্ধাদের নামকরণ রয়েছে অহরহ। বিভিন্ন বাজারের দোকানপাটও লাল সবুজ সাজে সজ্জিত। সবমিলিয়ে এ যেন জাতীয় পতাকার লাল সবুজের সমারোহ ও ভাস্কর্য সমৃদ্ধ এক উপজেলা।

ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী দাদাভাইয়ের নামে তোড়ন নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ এ কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিলেন বর্তমান চিফ হুইপ ও আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সাধারণ সম্পাদক নূর-ই-আলম চৌধুরী। এসকল স্মৃতিস্তম্ভে স্ব স্ব দিবসে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা জানানোয় প্রসার ঘটছে মুজিব আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।

শিবচর পৌর মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, আমাদের শিবচর উপজেলায় যে দিক থেকেই কেউ প্রবেশ করুক নজরে পড়বে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ বিভিন্ন ভাস্কর্য ও লাল সবুজের বিশাল সমারোহ। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল শিবচরে যে পরিমাণে রয়েছে বাংলাদেশে আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.