গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সস্ত্রীক এক কৃষককে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় গ্রামবাসী। বুধবার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর উত্তরপাড়া গ্রামে দখলকৃত জমির সামনে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানানো হয়।
মানববন্ধনে জমি জবর দখল ও নিরীহ কৃষক পরিবারের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য আনোয়ার হোসেন খান জানান, তার ভাই কৃষক একিন আলীর বাড়িসংলগ্ন ওয়ালেক্স টাইলস নামক একটি প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু জমি কিনে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছে।
সম্প্রতি কৃষক পরিবারের বেশ কিছু জমি ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে কৃষক একিন আলী সম্মত না হওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি বিকালে ভুক্তভোগী কৃষক একিন আলীর জমি জোরপূর্বক দখল করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। দখল কাজে বাধা দেন একিন আলী ও তার স্ত্রী সন্তানরা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে মাওনা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক আবু জাফর মোল্লার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলায় এক পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত হয় একিন আলীর পরিবার ও এলাকার ছয়জন। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় একিন আলী ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তারকে।
ঘটনার পর দিন ২২ জানুয়ারি পুলিশ বাদী হয়ে আটক একিন আলী ও তার স্ত্রী পুত্রসহ এলাকাবাসীর ছয়জনকে আসামি করে এবং একই দিনে কারখানার মালিক শামসুর রহমান খান বাদী হয়ে ১১ জনের নামে চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলা দুটি করার পর একিন আলীকে সস্ত্রীক জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ মামলার আসামি হওয়ার কারণে পরিবারের অন্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। আর এ সুযোগে ওই জমিতে ট্রাক দিয়ে বালু ফেলে এবং বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ শুরু করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুর রহমান খান জানান, তিনি একিন আলীর বাবার কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। এ জমির সঙ্গেই একিন আলীর জমি রয়েছে। আমি তার জমিতে বাউন্ডারির কাজ করছি না।
মাওনা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক আবু জাফর মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলা তদন্তাধীন তাই বক্তব্য দেওয়া যাবে না। শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তাদের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশও আহত হয়েছেন। একিন আলীর পরিবারের মাধ্যমে জমি দখলের কথা শুনে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।