সিরাজগঞ্জের আদালতের এক কর্মচারীর অসাদাচারনকে ঘিরে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা গত ৯ দিন থেকে আদালত বর্জন করেছে। এতে বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়লেও এখনো সমাধানের কোন পথ খুঁজে পায়নি কোন পক্ষই। এদিকে ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে মামলা দায়ের করেছে দুপক্ষ।
এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২০ জানুয়ারী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমাধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। দ্রুত সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষনাও দিয়েছেন আইনজীবীরা।
অপরদিকে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের সিরাজগঞ্জের নেতৃবৃন্দ জানান, তাদের সহকর্মীকে রক্তাত্ব করেছে আইনজীবিরা। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারাও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আইনজীবীদের অভিযোগ গত ১৩ জানুয়ারী আইনজীবী মো: আবুল কালামের চেম্বারে ঢুকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো: ইউসুফ আলী একটি মামলার বিষয়ে কথা বলে ঘুষ দাবী করেন। কিন্তু আইনজীবি ঐ মামলাটির আর চালাবেন না বলে জানালে ইউসুফ আলী আইনজীবীর সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে ইউসুফ আলী ও তার সহযোগীরা এক পর্যায়ে আইনজীবীকে মারধর করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্টেনোগ্রাফার মো: ইউসুফ আলী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ফোনে জানায়, হামলায় তিনি আহত হয়ে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে তিনি কোন প্রকার ঘুষ দাবী করেননি।
আইনজীবীদের অভিযোগ, আদালতে অসাধূ কর্মচারীদের জন্য বিচারপ্রার্থীরা প্রায়ই অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যে পড়েন। ইউসুফ আলী একজন মাদক সেবী এবং অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। প্রায়ই তিনি আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীদের জিম্মি করে এমন ঘটনা ঘটান। একই সাথে আইনজীবীরা আরো জানান, ইউসুফ আলী বেশ কয়েকটি মামলার আসামী হলেও তিনি বীরদর্পে চলাফেরা করেন। সিরাজগঞ্জের আদালত পাড়া ঘুষ দূর্নীতিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
আর ৯ দিন আদালত বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে বিচার প্রার্থীরা। তবে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের যুগ্ম, সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জের নেতা ফোনে জানান, আইনজীবীরা তাদের সহকর্মীকে রক্তাত্ব করেছে। দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারাও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক জানান, বিচারপ্রার্থীর কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে কাজ করে না দেবার কারনে বিচারপ্রার্থীরাই ইউসুফ আলীর উপর হামলা চালিয়ে ছিলো। আইনজীবীরাই সে সময় তাকে রক্ষা করেছে। কিন্তু ইউসুফ আলী উল্টো তাদের নামেই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আর সিরাজগঞ্জের আদালতের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না বলেও জানান তিনি।
দোষী ব্যাক্তিদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা করে আদালতের অচলাবস্থার অবসান করবে কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা বিচারপ্রার্থীদের।