× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

শ্রীপুরে বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৩২ এএম

প্রাচীনকাল থেকে বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। আধুনিকতার প্রবল স্রোতে বাংলার প্রাচীন এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। এই শিল্পের সাথে বহু বছর ধরে জড়িত মানুষগুলো বর্তমান সভ্যতার সাথে পেরে উঠছেনা। এই মাটির কারিগররা আগে মাটির বাসন কসন সহ বিভিন্ন মাটির তৈরী দ্রব্যাদি ব্যবহার, বিক্রি করলেও বর্তমানে মেলামাইন, এ্যালুমুনিয়াম ও প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এ শিল্প কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

তারপরও দেশের কোন কোন এলাকায় এখনো বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্পকে তারা ধরে রেখেছেন। এমনি একটি গ্রাম হচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা বাজার এলাকার কুমার পাড়া। এ পাড়ায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা শতাধিক। শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কম হলেও কর্মঠ মানুষর সংখ্যা বেশি। এ পাড়ার সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বাড়ির ভেতর ঢুকে দেখা গেল প্রায় সব ঘরগুলোই মাটির তৈরী। বাড়ির সামনে ছোট্ট উঠান। উঠানজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কাদামাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল, কড়াই, কলস, দইয়ের পাতিলসহ ছোট-বড় নানা রকমের পাত্র।

মাওনা বাজারের অরচনা রাণী পাল ও তার স্বামী লিটন পাল জানান, তাদের বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে পারছেনা। বর্তমান করোনা মহামারির সময় তাদের এই ব্যবসায় ব্যাপক মন্দা দেখা দিয়েছে। অন্য পেশায় যাওয়ারও কোন সুযোগ নেই। আধুনিকতার স্পর্শে এই শিল্পের কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা আজ অসহায় ও নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। হারাতে বসেছে দেশের নিপুণ শৈল্পীক গুণাবলী। এতকিছুর পরও অনেকে শত কষ্টের মাঝেও বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বালুজান পালপাড়া গ্রামের হিন্দু ধর্মালম্বী এই দুই দম্পতি প্রায় ত্রিশ বছর ধরে উপজেলার মাওনা বাজারে বসবাস করে মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। এই নিপুণ শৈল্পীক জিনিস পত্র বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। কথা হয় আল্পনা রাণী পালের সাথে তিনি কুমারদের বর্তমান অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, বহু আগে তার দাদার দাদারা এ গ্রামে এসছিলেন। তখন থেকে এখানে হিন্দু পাল বংশের আবির্ভাব। পালদের আনা হয় প্রতিমা, মুর্তি, হাড়ি পাতিল বানানোর জন্য। 

কিন্তু বর্তমান করোনার প্রভাবে মাওনা কুমার পল্লীর কুমাররা বেকার হয়ে পড়েছে। নিজেরা মাটির বাসন, কলস, হাড়ি পাতিল তৈরি করে নিজেরা বিভিন্ন বাজার ও গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন। এ নিয়ম চলে আসছে অনক দিন ধরে। নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় মাটির বাসন কসন বানানো সম্পর্কে তিনি বলেন ছোট বেলা থেকে চেষ্টা সাধনা করলেই এমন কাজ সহজে পারা যায়। বিগত ১০/১২ বছর আগেও সবাই এই পেশায় থাকলেও এখন অনেকে এ পেশা থেকে সরে গিয়ে বিদেশ যাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে জড়িয়ে পড়েছে। মাওনা কুমার পল্লীর কুমাররা মনে করেন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সংস্থার সহযোগিতা পেলে নিজেদের স্বাবলম্বী করা এবং বাঙালীর পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে। অন্যথায় অচিরেই এ পেশায় নিয়োজিত কারিগর গোষ্ঠী এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি হারিয়ে যাবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.