ঈদুল আযহা সন্নিকটে পশু জবাইয়ের জন্য দা, বটি তৈরির দোকানে টুংটাং শব্দে মুখরিত। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে দা বটি ছুরি তবে শান দেওয়া ও তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা। যারা কোরবানির পশু জবাই করবেন তাদের পরিবারের প্রধান কর্তারা দা, বটি, ছুরি ঠিক আছে কিনা দেখে এবং তা ঠিক করার জন্য নিয়ে যায় কামারপাড়ায়।
সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের বিভিন্ন বাজারগুলিতে কামারের দোকানে ভিড় লেগেই আছে দা বটি সারানোর জন্য। বুধবার (৬ জুলাই) সারাদিন সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায় টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে আছে বাজার প্রাঙ্গণ। এ মৌসুমে লোহার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লোহার তৈরি দা , বঁটি, ছুরির দাম ২০/৫০/১০০ টাকা করে বেড়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এসব জিনিস সারানোর ব্যয় বেড়েছে খানিকটা।
উপজেলার কাগমারি পাড়া গ্রামের এক বড় কামারের দোকানি বিমল কর্মকার জানান, গরু জবাইয়ের জন্য বড় একটি ছুরির দাম ১০০০/১৫০০ টাকা। বড় দা বটি বিক্রি করি ৫৫০/৬০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৩০০/৩৫০ টাকা, ছোট ছুরির দাম ১২০ টাকা মাঝারি ২৫০ টাকা। শুধুমাত্র এই সময়ের জন্য আমরা বসে থাকি সারা বছর তেমন বিক্রি হয় না।
উপজেলার খুপিবাড়ী গ্রামের সুভাষ কর্মকার দৈনিক সংবাদ সারাবেলা কে বলেন, আমি একজন ক্ষুদে ব্যবসায়ী। কোনরকম টুংটাং করে জীবন চলে। কোরবানি আসলেই একটু কাজ হয় আর ভালো কিছু খেতে পাই । সারা বছর তেমন কাজ থাকে না , বসে থাকতে হয় এগুলো লিখে কি লাভ? আমি দা বটি শান দিয়ে পাই ৫০/৭০ টাকা ডাট লাগালে ১২০ টাকা পাই। এভাবে প্রতিদিন আয় হয় ২০০ টাকা। ২০০ টাকা দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলে না।
উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারে দা বটি সারানোর জন্য আসা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দা-বটি ধরার জন্য এসেছি এটি আমার প্রতিবছরের কাজ। দা বটি শান দিতে এসে দেখি তেমন ভিড় নেই, তবে গত মৌসুমের চেয়ে এবার দামটা একটু বেশি। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় বেশিরভাগ বাজারের একই চিত্র। প্রতিটি বাজারে ২/৩ টির বেশি আমার কামার শালা দেখা যায় না। কিছু দোকানি এমনি বলছেন এখন আগের মত নতুন লোহার দা, বঁটি বিক্রি হয় না। দেশে বিভিন্ন ধরনের চাইনিজ এবং বিদেশি ইস্পাতের দা, ছুরি এসে যাওয়ায় তাদের বিক্রি কমে গেছে। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে কামারশালা।