প্রায় দেড় বছর আগে নিজের বাবা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টাঙ্গাইল। ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মির্জাপুর উপজেলার দেওভোগ দক্ষিণপাড়া এলাকার হযরত আলীকে তার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা পর ভাগ্নে আসিফের সহায়তায় পুকুরে কচুরিপানার নিচে লাশ লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনায় আসিফকে গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানবীর আহাম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামি আসিফকে গ্রেফতার করে সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠায় পিবিআই। আদালতে সে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। মির্জাপুর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
সোমবার (৪জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে হযরত আলী তার ছেলে জাহাঙ্গীর ও নাতী আসিফকে নিয়ে কুমুল্লির বিলে নিজেদের পুকুরে মাছ ধরতে যান। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন হযরত আলী। আটদিন পর ৩ মার্চ সকালে সেই পুকুর থেকে হযরত আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হযরত আলীর আরেক ছেলে সুজন মোল্লা অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তভার ন্যাস্ত হয় পিবিআই-এর উপর। তারা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেলদুয়ারের লাউহাটি থেকে আসিফকে গ্রেফতার করে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে জাহাঙ্গীর মোল্লাকে মির্জাপুর থানা পুলিশ কয়েকমাস আগেই গ্রেফতার করে। এখন জেলহাজতে রয়েছে। তবে তিনি ঘটনা স্বীকার করেননি।
জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে হযরত আলীর সাথে তার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লার বিরোধ চলছিল। গ্রেফতারের পর আসিফ নিজের দোষ স্বীকার করে জানায়, ঘটনার রাতে তারা তিনজনে মাছ ধরতে যায়। জাহাঙ্গীর পিছন থেকে হযরত আলীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে মারা যায়। তখন জাহাঙ্গীর হত্যার বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে আসিফকে নিষেধ করে এবং লাশ গুম করার জন্য তাকে সহযোগিতা করতে বলে। আর সহযোগিতা না করলে তাকেও হত্যার হুমকি দেয় জাহাঙ্গীর। পরে আসিফ ও তার মামা জাহাঙ্গীর মিলে হযরত আলীর লাশ পুকুরের একপাশে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। একই সাথে মাটিতে লেগে থাকা রক্ত পানি ও কাঁদা ধুয়ে পরিষ্কার করে তারা বাড়ি চলে যায়।