সফররত তুরস্কের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলেছে, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি উৎকৃষ্ট গন্তব্য স্থল। পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক নীতি ও আইনী কাঠামো এবং সার্বিকভাবে বাণিজ্যিক পরিবেশ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য সহায়ক।
তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’র চেয়ারপার্সন হুলিয়া জেডিকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আজ ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দের ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’তে সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা সভায় যোগাদন করে এ অভিমত ব্যক্ত করে। এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৮৬.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে আমদানি ও রপ্তানি ছিল যথাক্রমে ২৩৩.৪১ এবং ৪৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ৪৯৯.৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যাতে প্রতিফলিত হয় যে, তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের অবকাঠামো, নির্মাণ, রেলওয়ে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অটোমোবাইল, স্বাস্থ্যসেবা, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি, জাহাজ-নির্মাণ, কৃষি এবং হোম এমপ্লায়েন্স প্রভৃতি খাত বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য অন্তত সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করে ডিসিসিআই সভাপতি তুরস্কের উদ্যোক্তাদেরকে বাংলাদেশে আরও বেশি হারে বৈদেশিক বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তুরস্কের মোট আমদানির মাত্র দশমিক ২১ শতাংশ বাংলাদেশ হতে নিয়ে থাকে এবং দু’দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে আরও বেশি হারে বাংলাদেশ হতে পণ্য আমদানির প্রস্তাব করেন। এছাড়াও দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধিকল্পে বাংলাদেশ-তুরস্ক বিজনেস কাউন্সিলের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন হুলিয়া জেডিক বলেন, প্রয়োজনীয় যোগাযোগের অভাবে তুরস্কের উদ্যোক্তাদের নিকট বাংলাদেশের পরিচিত বেশ কম, এমতাবস্থায় দু’দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের টেকসই উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি তুরস্কের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে সম্প্রতি তুরস্কে একটি ‘বাংলাদেশ রিসার্চ সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এবং পৃথিবীর ১০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে উত্তরণের লক্ষ্যে তুরস্ক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, দু’দেশের অভিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ করে বেসরকারিখাতের পার্টনারশীপ আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাত বেশ সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করে তুরস্কের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি তুরষ্কের উৎপাদিত যন্ত্রপাতি বিশ্বমানের হলেও তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যের হওয়ায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বেশি হারে তুরস্কের যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, তুরস্কের বেশ কিছু কোম্পানী ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আগামীতে এধরনের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।
তুরস্কের দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর কেনান কালাইসি বলেন, ২০২১ সালের প্রথম নয় মাসে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খুব দ্রুত বাংলাদেশ-তুরষ্কের বাণিজ্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh