রিজিয়া খাতুন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের অগ্রজ সৈনিক। নড়াইল জেলা থেকে যে তিনজন নারী ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন রিজিয়া খাতুন তাদেরই একজন। এছাড়া ঢাকায় ভাষা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে নড়াইল জেলা শহরে প্রথম যে ১০-১৫ জন মিলে শহীদ মিনার স্থাপন করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সেই দলে ছিলেন তিনিও। ভাষা আন্দোলনের পাশাপাশি ব্রিটিশবিরোধী তেভাগা আন্দোলনেও তার সক্রিয়া ভূমিকা রয়েছে।
১৯৫২ সালে ঢাকায় মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য আন্দোলন শুরু হলে এর ঢেউ লাগে জেলা শহরগুলোতে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নড়াইলেও শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। সেদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে মুখরিত করে তোলে। সেদিন ছাত্ররা আন্দোলনে যোগ দেয়ার জন্য ছাত্রীদের আহ্বান জানালে নড়াইলে মাত্র তিনজন নারী সরাসরি যোগ দেন মিছিলে।
এদের একজন রিজিয়া খাতুন। ভাষা আন্দোলন নিয়ে নড়াইল শহরের মহিষখোলা বর্তমানে নড়াইল সদর এলাকার বাসিন্দা ও তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন মোক্তারের বাড়িতে গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। এসব বৈঠকে অংশ নেন রিজিয়া খাতুন, আফসার উদ্দিনের কন্যা সুফিয়া খাতুন ও রুবি। এ বৈঠকে ছাত্র-জনতাকে সংগঠিত করার জন্য কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হতো। তিনিসহ ১০-১৫ জন মিলে শহরের তৎকালীন কালিদাস ট্যাংক (বর্তমান টাউনক্লাব) এরপাশে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষিকা। ৯০ বছরের এই ভাষা সৈনিক বর্তমানে অবসরে আছেন।