দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন হরিণমারী। এই ইউনিয়নের নয়াপাড়ার গ্রামেই রয়েছে প্রায় ২০০ বছর বয়সী এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি আমগাছ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন এটি একটি সাধারণ আমবাগান। কিন্তু কাছে গেলে দেখতে পারবেন এটা বাগান না, একটি মাত্র গাছ। গাছটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর ডাল। আমগাছটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ হিসেবে পরিচিত।
গাছের ডালগুলো কাণ্ড থেকে বেরিয়ে একটু ওপরে উঠেই মাটিতে নেমে গেছে। তারপর আবারও উঠেছে ওপরের দিকে। দেখতে অনেকটা অক্টোপাসের মতো। কাণ্ড থেকে বের হয়েছে গাছটির অনেকগুলো শাখা। গাছের প্রতিটি ডালে অনায়াসে হাঁটাচলা ও বসা যায়। এগুলো একেকটা মাঝারি সাইজের আমগাছের মতো।
এশিয়াজুড়ে সূর্যপুরী জাতের এত বড় আমগাছ আর নেই। ফলে এটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে তাদের উপস্থিতি থাকে বেশি।
গাছটির বর্তমান মালিক দুই ভাই সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম। তারাও সঠিক বলতে পারেন না যে, ঠিক কবে গাছটির চারা রোপণ করা হয়েছিল। তাদের ধারণা প্রায় ২০০ বছর হবে গাছটির বয়স।
স্থানীয়রা বলেন, “গাছটি আমাদের এলাকার জন্য গর্বের। সরকার যদি এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলে তাহলে আমাদের অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।”
আমগাছ দেখতে আসা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরফিন বলেন, “আমাদের দেশে এত সুন্দর বড় আমগাছ আছে তা আমরা অনেকেই জানি না। এখানে ভালো একটা পিকনিক স্পট হতে পারে। তবে যাতায়াতের ব্যবস্থা অনেক খারাপ। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নতি ঘটলে সব দিক দিয়ে ভালো হয়।”
রাজশাহী থেকে আসা আজাহারুল বলেন, “আমাদের রাজশাহী আমবাগানের জন্য বিখ্যাত হলেও এমন বড় আমগাছ নাই। অনেকদিন ধরে গাছটি দেখার ইচ্ছা ছিল। নানা কারণে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। আজ আসার পর দারুণ লাগছে।”
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের জেলায় যে আমগাছটি রয়েছে, তা আমাদের গর্বের। প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে গাছটি। আমরা সরকারের তরফ থেকে এটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করছি। গাছটি কীভাবে আরও বেশি দিন বেঁচে থাকে সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি।