টানা পাঁচদিনের লম্বা ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাজেকে। অপরূপ সৌন্দের্যের লীলাভূমি দুর্গম সাজেকেও এখন পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন সাজেকে এইবার বেশি পর্যটক এসেছে। হোটেল- মোটেলগুলো ৯০ ভাগ বুকিং আছে। ব্যবসায়ী এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছে।
এদিকে সারাদেশের জন্য আলোচিত পর্যটনস্পট সাজেকের রুইলুই, হেলিপ্যাড, কংলাক পাহাড় ও ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে পর্যটকদের ভিড় লেগে আছে। তবে পর্যটকের বাড়তি চাপের কারণে অনেকে রিসোর্ট বা কটেজে জায়গা না পেয়ে রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টানিয়ে।
সাজেকের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরো এলাকায় বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। আগামী ৮ তারিখ পর্যন্ত পুরো সাজেক ব্যস্ত সময় পার করবে।
রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক ব্যবসায়ী সৌরভ শিকদার বলেন, গতকাল বিকেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাজেকে এসেছি। কোনো রুম না পেয়ে হোটেল প্রাঙ্গণে তাঁবু টানিয়ে রাত কাটাচ্ছি।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা লতিফ চৌধুরী বলেন, ‘সাজেকের গল্প শুনেছি। এবার বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বাস্তবে এসেছি। আগে রুম বুকিং দেওয়ায় আমাদের কষ্ট করতে হয়নি। তবে এখানে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মনের মতো সময় কাটাতে পারছি না।’
সাজেট ট্রাভেল গাইডের স্বত্বাধিকারী মো. ইউনুস আরেফিন জানান, ‘সাজেকে অসংখ্য ট্যুরিস্ট এসেছেন। হোটেল-মোটেলগুলো চলতি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। পর্যটকরা রুম না পেয়ে হোটেল প্রাঙ্গণে তাঁবু টানিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এজন্য আবার তাদের হোটেল কর্তৃপক্ষকে টাকা দিতে হচ্ছে।’
সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিংথাংজাওয়া লুসাই জেরি বলেন, ‘গত তিনদিনে সাজেকে অসংখ্য পর্যটক এসেছেন। কোনো রিসোর্ট ও কটেজ খালি নেই। ফলে অনেককে খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, এ মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত সাজেকের সব রুম বুকড (আগাম ভাড়া নেওয়া)। যে কারণে আমরা ৮ তারিখ পর্যন্ত নতুন কোনো বুকিং নিচ্ছি না।
সাজেক এলাকার মনো আভা রিসোর্টের ম্যানেজার মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘সাজেকে চলতি সপ্তাহে অনেক পর্যটক এসেছে। পর্যটকের পরিমান অনুযায়ী হোটেলের রুম খালি নেই। অনেক পর্যটক গতকাল খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে। আজও এর ব্যতিক্রম হবে না।’
এছাড়াও সাজেকে থাকার জায়গা না পেয়ে অনেক পর্যটক সূর্যাস্তের আগেই সাজেক ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট গাইড ও রিসোর্ট মালিকেরা।
গত মঙ্গলবার রাতে প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধস হওয়ায় বুধবার সাজেগগামী এবং সাজেক থেকে খাগড়াছড়িগামী হাজার-হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। এরপর সেনাবাহিনীর টানা ৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে নিলে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।