শুরুটা অনেকটা একপেশে হলেও সময়ের সাথে সাথে সুপার কোপা দে এস্পানার এল ক্ল্যাসিকো সেমিফাইনাল যেন সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়েই বসেছিল। ব্রাজিলিয়ান ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোলে শুরু, এরপর বার্সা জবাব দিয়েছিল বিরতির আগে। দ্বিতীয়ার্ধেও দেখা গেল একই রকম দৃশ্য, রিয়ালের গোলের জবাব বার্সা দিচ্ছে সমতা ফিরিয়ে। তবে যোগ করা অতিরিক্ত সময়েও তার পুনরাবৃত্তি আর ঘটানো হলো না কাতালানদের। তাতেই ৫ গোলের থ্রিলারে বার্সাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল, টানা পঞ্চম ক্ল্যাসিকো জয়ে বড়াইয়ের অধিকারটাও নিয়ে নিলো নিজেদের ভাগে।
শেষ কিছুদিন ধরেই রিয়াল মাদ্রিদ আছে আগুনে ফর্মে। বিশেষ করে তাদের আক্রমণভাগ। বৃহস্পতিবার রাতের ম্যাচেও দেখা গেল তারই ছাপ। শুরু থেকে আধিপত্য ছিল দলটির। দারুণ গতি নিয়ে প্রতি আক্রমণে ভাঙছিল বার্সেলোনার রক্ষণ। ৮ আর ১৯ মিনিটে দু’বার গোলের কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলেন মার্কো অ্যাসেনসিও। তবে দু’বারই তার শট বেরিয়ে গেছে লক্ষ্যের একটু বাইরে দিয়ে। মাঝে একবার ভিনিসিয়াস জুনিয়রের চেষ্টাও শেষ হয়েছে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের হাতে।
তবে প্রথম বিশ মিনিটে গোটাতিনেক প্রতি আক্রমণে যে সতর্কবার্তাটা বেজেছিল বার্সার ঘরে, সেটাই বিপদ হয়ে এলো ২৫ মিনিটে। মাঝমাঠে সার্জিও বুসকেটস থেকে বলটা কেড়ে নেন বেনজেমা, দখল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই তা ফরাসি তারকাকে ফেরত পাঠান তিনি, তিনিও কোনো সময় না নিয়েই বাড়ান মার্কার দানি আলভেসকে পেছনে ফেলে বেরিয়ে যেতে থাকা ভিনিসিয়াসকে। সেখান থেকে একটু আগ বাড়িয়ে গোলটা করতে কোনো অসুবিধাই হয়নি ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের।
গোলের আগ পর্যন্ত রিয়াল রক্ষণকে তেমন বিপদেই ফেলতে পারেনি বার্সা। গোল হজম করে তবেই যেন টনক নড়ল দলটির। বাঁ পাশ থেকে গোটাদুয়েক ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে কিছুটা ব্যস্ততা এনে দিয়েছিলেন লুক ডি ইয়ং, তবে সে দুই হেডারও খুব একটা শক্তিশালী ছিল না। যেমন ছিল না ৪২ মিনিটে পাওয়া গোলের ‘শটটাও’।
বা পাশ থেকে উসমান দেম্বেলে নিচু ক্রস দিয়েছিলেন ছয় গজের বক্সে থাকা লুক ডি ইয়ংকে। তা ঠিকঠাক বিপদমুক্ত করতে পারেনি রিয়াল রক্ষণ, তা-ই ডাচ স্ট্রাইকারের পায়ে লেগে দিক বদলে বারপোস্ট ছুঁয়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে, গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তখন।
প্রথমার্ধে অনেকটা কোণঠাসা থেকেও বার্সা শেষ করে ১-১ সমতায়। সে আত্মবিশ্বাসটাই যেন দলটা কাজে লাগাল দ্বিতীয়ার্ধে। ফেররান তরেস আর ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বদলি হিসেবে নামা এজ আবদে আর পেদ্রি গনজালেসেরও কৃতিত্ব ছিল বৈকি! বিরতির পরই নেমে ডান প্রান্তে দলকে দিয়েছেন গতি, আর মাঝমাঠের দখলটা এনে দিয়েছিলেন পেদ্রি।
তাতে গোটাচারেক সুযোগও এসেছিল বার্সেলোনার সামনে। সেসব কাজে লাগানো হয়নি। তার মাশুলই দলটা দিয়েছে ৭২ মিনিটে। কারিম বেনজেমার গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল। তবে তার জবাবটাও এসেছে দশ মিনিটের মধ্যেই। জর্দি আলবার ক্রস থেকে গোল করেন বদলি হিসেবে মাঠে নামা আনসু ফাতি। শেষ বাঁশির আগে আরও কয়েকবার আক্রমণে উঠেছে দুই দল। তবে তার কোনোটাই সফলতার মুখ দেখেনি ফলে খেলা গড়ায় যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়েও বার্সা বলের দখল রেখেি গোলের খোঁজে ছুটছিল। রিয়ালও নিজেদের প্রত্যেকটা প্রতি আক্রমণে ত্রাস ছড়াচ্ছিল বার্সা রক্ষণে। তেমনই এক প্রতি আক্রমণে কপাল পোড়ে বার্সার। সেখানেও ব্যবধানটা গড়ে দিলেন আরেক বদলি। লুকা মদ্রিচের বদলি হিসেবে নামা ফেদে ভালভার্দে করেন গোলটা। যদিও তার পুরো কৃতিত্বটা দুই ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগো আর ভিনিসিয়াসের। প্রতি আক্রমণে বক্সে উঠে এসে বল স্কয়ার করেন রদ্রিগো, তাতে ভিনিসিয়াসের ডামি বোকা বানায় বার্সা রক্ষণকে। তারই সুযোগ নিয়ে গোলটা করেন ভালভার্দে।
শুরুর দুই অর্ধে দুই গোল হজম করেও জবাব দিতে পেরেছিল বার্সা। তবে অতিরিক্ত সময়ের এই গোলের কোনো জবাব চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দিতে দেয়নি রিয়াল। তাতেই ৩-২ গোলের থ্রিলারে জিতে রিয়াল পাড়ি জমায় সুপার কোপা দে এস্পানার ফাইনালে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh