× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

অবশেষে বাড়ি পোঁছল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকের মাকে লেখা চিঠি

সংবাদ সারাবেলা ডেস্ক

২০ মে ২০২৩, ০৩:০৬ এএম

১৯১৯ সালের উত্তর-পশ্চিম ফ্রান্স। মা দিবসের আগেরদিন এক তরুণ আমেরিকান সৈনিকের নিজের মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল। সাথেসাথে তিনি তা-ই করলেন যা ঐ সময়কার অন্যান্য ছেলেরা করতো। মায়ের কাছে আবেগপূর্ণ একটি চিঠি লিখলেন তিনি। এটা ছিল রণাঙ্গন থেকে এক সন্তানের তার মায়ের কাছে লেখা চিঠি; যে চিঠি পড়লে মায়ের মন বিগলিত হতে বাধ্য। সম্প্রতি ইউএসএ টুডে'র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ১০৪ বছর পর সেই চিঠির বাড়ি পৌঁছানোর গল্প।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ওই মার্কিন সৈন্যের নাম ছিল কার্ল হাও। মাকে তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন, "কিভাবে আমি আগামীকাল ঘরে ঢুকেই তোমাকে সারপ্রাইজ দিব? দিনের এমন কোনো সময় নেই যখন তোমার কথা আমার মনে পড়ে না। তোমার কথা চিন্তা করা এবং তোমার দেওয়া সুন্দর উপদেশগুলো সবসময়ই উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আমাকে পথ দেখায়। এই পৃথিবীর কোনোকিছুই আমার কাছ থেকে এই উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা ছিনিয়ে নিতে পারবে না।"

সম্ভবত সেদিন মাকে নিয়ে খুব বেশিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন তরুণ কার্ল। তিনি জানিয়েছিলেন, সাধারণ সময়ে এরকম চিঠি তিনি লেখেন না। "কিন্তু আমার মনে হয় মা দিবসে লেখা চিঠিতে এই আবেগ-অনুভূতিগুলো লিখে প্রকাশ করা উচিত",বলেচিলেন কার্ল।

কার্লের সেই চিঠি লেখার ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর চিঠিটি মাত্র ১৫০ ডলারে নিলামে তোলা হয় ইবে'তে। কিন্তু মাইহেরিটেজ-এর এক গবেষক যখন এটি খুঁজে পান, তখন তিনি বুঝতে পারেন কী অমূল্য রত্ন এই চিঠিটি! 

ই-কমার্স সাইট ইবে'তে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ কার্লের চিঠিটা চোখে পড়ে গবেষক রোই ম্যান্ডেলের। মাইহেরিটেজ-এর গবেষণা পরিচালক হিসেবে ম্যান্ডেল সাথেসাথেই বুঝতে পারেন এই চিঠির ঐতিহাসিক গুরুত্ব কতখানি।

"আমরা চিঠিটা পড়েছি এবং এটা এত সুন্দর একটা চিঠি ছিল যে আমরা ঠিক করে ফেলি, চিঠিটা তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতেই হবে। চিঠিটা অবশ্যই এর সঠিক মালিকের হাতে যাওয়া দরকার, ইবে'তে বিক্রির জিনিস নয় এটা", ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে ইউএসএ টুডে'কে বলেন ম্যান্ডেল।

অতঃপর ইবে থেকে দেড়শো ডলারে চিঠিটা কিনে নেয় মাইহেরিটেজ নামের এই অনলাইন জিনিয়ালজি প্ল্যাটফর্ম এবং কার্ল হাও এর পরিবার অনুসন্ধানে নেমে পড়ে। এই প্ল্যাটফর্মে থাকা ১৯.৪ বিলিয়ন ঐতিহাসিক নথিপত্র থেকে যেকেউ চাইলে তার পারিবারিক, বংশানুক্রমিক ইতিহাস বের করতে পারে।

প্রথমে গবেষক দল চিঠিতে থাকা স্বাক্ষর, ডেলিভারির ঠিকানা এবং কার্লের মায়ের নাম দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। সেই সূত্র ধরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারির নথিপত্রে কার্লের পরিবারের বিস্তারিত তথ্য, কার্লের সেনাবাহিনীতে নাম লেখানো এবং তার বিয়ে ও মৃত্যুর তারিখ খুঁজে বের করে। ১৯২৮ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে ভুগে মারা যান কার্ল হাও।

শীঘ্রই গবেষকরা কার্লের একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর পর ছাপা হওয়া শোক সংবাদ খুঁজে পান। বাবার মৃত্যুর সময় মেয়েটির বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। এরপর আস্তে আস্তে পাওয়া যায় কার্লের মেয়ের ঘরের নাতি-নাতনির নাম। এদের একজনের নাম জ্যান বেলিস-স্কয়ারস, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগ্যান রাজ্যের বেভারটনের বাসিন্দা।

কার্ল হাও নিজের মাকে চিঠি লেখার ১০৪ বছর পর শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাল তার চিঠি। যে নাতনিকে দেখার সৌভাগ্য তার হয়নি, সেই নাতনিই চলতি বছরের এপ্রিলের শেষদিকে তার চিঠি গ্রহণ করলেন। 



Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.