× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

এটিএম কার্ড ও মোবাইল ফোন প্রতারণার ঘাঁটি কালামৃধা ইউনিয়ন

মো. রফিকুল ইসলাম, ভাঙ্গা (ফরিদপুর)

১৫ নভেম্বর ২০২২, ০২:৩১ এএম

ফরিদপুর জেলায় ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়ন ব্রিটিশ শাসনামলেরও আগে নামকরণ হওয়ায় ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। তবে এ ঐতিহ্য এখন অতীত। বর্তমানে গ্রামটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ও মোবাইল ফোন প্রতারক চক্রের  সূতিকাগারে পরিণত হয়েছে। 

শিক্ষার হারে পিছিয়ে থাকা এইইউনিয়নের ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে প্রতারণার ক্যাম্প। এমনকি এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠজনরাও একই ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত। 

সেখানে বসেই এটিএম কার্ড জালিয়াতি ও মোবাইলে প্রতারণা  করে টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক চক্র। বেসরকারি একটি  ব্যাংকের  এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে গিয়ে এই ইউনিয়নের তথ্য পায় পুলিশ। পরে জালিয়াতির সংশ্লিষ্টতার দায়ে গ্রেফতার করা হয় চেয়ারম্যানকে।

সম্প্রতি ঢাকার বেশকিছু এলাকায় ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করে একটি চক্রকে শনাক্ত করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পরে চক্রটির মূল হোতা ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবি সাইবার উত্তরের একটি দল। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মতে, চক্রটি সিঙ্গার, ওয়ালটনসহ বিভিন্ন কোম্পানির হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে এসব কোম্পানির শোরুমে ফোন করে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করেছে এমন গ্রাহকদের তথ্য জানতে চায়। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে গ্রাহকদের কার্ডের তথ্য নিয়ে নেয়। পরে ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয়ে ওটিপি পাঠিয়ে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল মাতুব্বর, নাঈম হোসেন, দিদার মুন্সী ও মো. জাহিদুল খান। তাদের গত শুক্রবার ঢাকা, ফরিদপুর ও নারায়ণগঞ্জের একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রেজাউল মাতুব্বর মূলত একজন ‘হ্যালো পার্টি’র সদস্য। তিনি প্রতারণার অভিযোগে কয়েক মাস আগে জেল খেটেছেন। জেল থেকে বের হয়ে যুক্ত হয়েছেন ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে। রেজাউলের বন্ধু দিদার মুন্সি ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার অন্যতম হোতা। রেজাউল ও তার বন্ধু মিলে পুরো ইউনিয়ন ও আশপাশের ইউনিয়নের ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রেজাউলের বিরুদ্ধে একটি মাদক এবং চারটি প্রতারণার মামলা আছে। দিদারের নামে ডিজিটাল আইনে দুটি প্রতারণার মামলা রয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের মধ্যে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হলো নাইম হোসেন ও জাহিদুল খান। নাঈমের নামে ডিজিটাল আইনের একটি মামলা চলমান।

ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের এডিসি ফজলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহারকারীরা চক্রটির ফাঁদে পড়ে টাকা হারিয়ে অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগের তদন্ত করে আমরা ইউপি চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। পরে সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করেছি। এ চক্রে কারা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছি।

এটিএম কার্ডের তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া নিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, শোরুমের গ্রাহকদের ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের তথ্য পাওয়ার পর ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গ্রাহককে ফোন করে বলেন, ‘আপনার কার্ডের নিরাপত্তার জন্য পিন কোড ৪ ডিজিট থেকে ৬ ডিজিট করা প্রয়োজন’। গ্রাহকরা সরল বিশ্বাসে পিন কোড পরিবর্তনের জন্য বর্তমান পিনসহ কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও কার্ডের সিভিবি নম্বর দেয়। পরে চক্রটি এমএফএসের অ্যাড মানি অপশনে গিয়ে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য দেয়। পরে একটি ওটিপি গ্রাহকের নম্বরে গেলে গ্রাহককে তা প্রদান করতে বলে। গ্রাহক তার কার্ডের পিন কোড পরিবর্তনের আশায় ওটিপি দেয়ার পর কার্ডের টাকা এমএফএস নম্বরে ট্রান্সফার করে নেয় চক্রটি। পরে আসামিরা কয়েকটি ধাপে বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্ট হতে ক্যাশআউট করে নেয়। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.