× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নির্মাণাধীন টেকসই বেড়িবাঁধের স্থায়িত্ব নিয়ে শংকা

সুপার সাইক্লোন সিডরের ১৫ বছর

মাসুম বিল্লাহ, শরণখোলা (বাগেরহাট)

১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৭:০১ এএম

দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল বাগেরহাটের শরণখোলায় আঘাত হানা সুপার সাইক্লোন সিডর কেড়ে নিয়েছিল সহস্রারাধিক মানুষের প্রাণ। পাশাপাশি নষ্ট হয়েছিল হাজার হাজার হেক্টর ফসলের জমি ও গাছপালার। বিধ্বস্ত হয়েছিল ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। প্রলয়ংকারী স্রোতের টানে ভাসিয়ে নিয়েছে আপনজনদের। জীবনযাত্রার মান কিছুটা স্বাভাবিক হলেও সিডরের ১৫ বছর পরে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান হলেও নদী শাসণ ব্যবস্থা না থাকায় তার স্থায়িত্ব নিয়ে উপকুলবাসীর মধ্যে রয়েছে শংকা।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাত ৯টা জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করলে মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে। রাত ১০টা আচমকা বৃষ্টিসহ বাতাসের তীব্রতা বেড়ে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে মুহুর্তের মধ্যে ১০-১২ ফুট উচ্চতায়। অসহায় মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে আসা মাত্রই ২৪০-২৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস এবং পানির ¯্রােতে মানুষ, গবাদী পশু ভেসে গেল। রাত ১০টা থেকে ১২ পর্যন্ত ২ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল সেদিনের তাণ্ডব। এ তান্ডবে সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৭০৯ জন মানুষ মারা যায় কিন্তু বাস্তব চিত্র তার উল্টো। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে জান-মালের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গৃহপালিত পশু সহ কৃষি আবাদের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মাত্র ২ ঘন্টায় শরণখোলা সহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গেল। ক্ষতিগ্রস্ত সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী, গাবতলা, চালিতাবুনিয়া, বগী, শরণখোলায় মানুষতো দূরের কথা কোন ঘর বাড়িরই অস্তিত্ব ছিলনা। খালে-বিলে, গাছের ডালে এবং ঘরে চাপা পড়ে ছিলো মানুষের মৃতদেহ।

জীবনযাত্রার মান কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আতঙ্ক কাটেনি সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষের। ঘুর্ণিঝড় সিডরে বিধ্বস্ত এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারী বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যে টেকসই বেড়িবাঁধের শতভাগ কাজ শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তরের অপেক্ষা। তবুও আতংক কাটছেনা এলাকাবাসীর। ২০২০ সালের ৮ ও ৯মে দুই দিনের আকস্মিক ভাংঙ্গনের ফলে বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা ও বগী গ্রাম সংলগ্ন ৩৫/১ পোল্ডার সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৫ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া ২০২০ সালের ১৯ মে রাতে সাউথখালী ইউনিয়নের বগী থেকে গাবতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার নির্মানাধীন বেড়িবাধ ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়।

ওই সময়ে সেনাবাহিনীকে ভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব প্রদান করা হলে ২০২০ সালের ১৬ জুন সাউথখালী ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত অধিক ঝুকিপূর্ণ বগী থেকে গাবতলা পর্যন্ত আট কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে ১ হাজার ৭শ মিটার রিং বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেনাবহিনী। ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল গাবতলা এলাকার আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন এলাকার মূল বাঁধে প্রায় ২০ ফুট দীর্ঘ এক ফাঁটল দেখা গেছে। পাশাপাশি গাবতলা এলাকার বাসিন্দা সবেদ আলী খানের গাছপালা সহ প্রায় এক বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের ইউপি সদস্য মো. জাকির হাওলাদার বলেন, উপজেলার সাউথখালী বাসীর প্রাণের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। বাঁধ নির্মাণে সরকার প্রচুর বরাদ্দ দিলেও একটি স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজিতে বাঁধে মাটির পরিবর্তে বালুর ব্যবহার ও নদী শাসন না করে বাঁধ নির্মাণ করায় এ বাঁধে প্রতিনিয়ত ফাঁটল ও বাঁধ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বাঁধের অস্তিত্ব নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন এ জনপ্রতিনিধি।

পানি উন্য়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, নদী শাসন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে ডিডিপি আকারে একটি প্রকল্প একনেকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.