× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ওপারে বাঘের গর্জন, এপারে স্কুল ধসের আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

এম পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ

০৪ নভেম্বর ২০২২, ০২:৩৪ এএম

সুন্দরবন সংলগ্ন দুটি উপজেলার সিমান্তে মাঝখানে একটি খাল দেড় কিলোমিটার দূরত্বে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ওপারে প্রতিনিয়ত বাঘের গর্জন এপারে পরিত্যক্ত ভবনে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান, ভবন ধসের আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা।

 স্থানীয়দের দাবি একটি নতুন ভবন স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারের। 

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের পিসি বারইখালী গ্রাম সুন্দরবনঘেষাঁ পাশেই সীমান্তবর্তী শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম ধানসাগর গ্রাম। মাঝখানে একটি ছোট খাল এপারে পিসি বারইখালী গ্রামের ১৯৪০ সনে স্থাপিত ১৬১নং চরকগাছিয়া আকনবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১৮ জন। ক্লাস চলছে ২য় শিফটের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির। আজোপাড়াগাঁয়ের এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। ১৯৯৪ সালে নির্মিত ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি এখন জরাজীর্ণ। বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে খসে পড়ে গোটা ভবন এখন ক্ষত-বিক্ষত। তারমধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে একটি কক্ষে ৫ম শ্রেণির পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা। অফিস কক্ষটির অবস্থাও একই। নেই স্যানিটেশনেরও ব্যবস্থা, অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। 

 শিক্ষার্থী ওমর ফারুক মৃধা, পাপড়ি আক্তার, সানজিদা আক্তার, সফিউুল্লাহ, নাসরুল্লাহসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, খালের ওপারে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের বাঘের গর্জন শুনে ভয়ে থাকি। বনের বাগ অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে। আমাদের শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে অনেকদিন ধরে। এর মধ্যেও কষ্ট করে আমরা ক্লাস করি। বাবা-মা স্কুলে পাঠিয়ে দিয়ে আমাদের জন্য দুশ্চিন্তায় থাকেন। ঝড়-বন্যার সময়েও আশ্রয় নেয়ার কাছাকাছি কোনো সাইক্লোন শেল্টার নেই। কবে হবে আমাদের বিদ্যালয়ের নতুন ভবন? 

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, ২০১৭ সালে স্কুলের এ ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হলেও ২০১৯ সালে একবার সয়েল টেষ্ট হয়েছে। পরবর্তীতে আর কোন অগ্রগতি নেই। এ বিদ্যালয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে একটি কক্ষের পাঠদান ঝুঁকি নিয়ে এ ভবনে করা হচ্ছে, শিক্ষকদের অফিস কক্ষটিও এ ভবনে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও ইউনিসেফ কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থায়নে অস্থায়ীভিত্তিতে একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে সেখানে ছেলেমেয়েদের আপাতত ক্লাস করানো হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদানে অভিবাভকেরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাচ্ছেন না।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন আকন, অভিভাবক আবজাল হোসেন হাওলাদার, মনির হাওলাদারসহ একাধিক অভিভাবক বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী দুটি ইউনিয়নের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো সাইক্লোন শেল্টার। প্রতিবছরই ঝড়, বন্যার সময় এ গ্রামের ৩/৪ হাজার মানুষের আশ্রয় নেয়ার কোনো জায়গা থাকে না। 

এ বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা জন্য জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কাগজে কলমে এখনো পরিত্যক্ত ঘোষণা হয়নি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এ বিদ্যালয়ের ভবনটির খোঁজ-খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় ২০টি বিদ্যালয় পরিত্যক্ত তালিকা অনুমোদন হয়েছে। ৪টি ভবনের টেন্ডার হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এ উপজেলায় ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের ইতোমধ্যে মাটি পরীক্ষা ও টেন্ডার সম্পন্ন করে কাজ শুরু হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী পরিত্যক্ত ভবনগুলোর সয়েল টেস্টের অনুমোদন চেয়ে ঊর্ধ্বতন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.