× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

টেকনাফের পাহাড়ে বেড়েই চলেছে অপহরণ আতঙ্ক!

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

০২ অক্টোবর ২০২২, ০২:৩৫ এএম । আপডেটঃ ০২ অক্টোবর ২০২২, ০২:৩৬ এএম

কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে অপহরণ শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তাদের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লোকজন। 

দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে পাহাড়ে ধরে নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।

টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় বাণিজ্যের রেশ না কাটতে পেয়ারা বাগান হতে আরো একজনকে অপহরণ করা হয়েছে। উপজেলার হ্নীলা পানখালী এলাকা হতে অপহৃত পিতা-পুত্রকে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো না হওয়ায় পাহাড়ি জনপদের গ্রামসমূহে অপহরণ আতংক অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, ১ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে উপজেলার হ্নীলা মরিচ্যাঘোনার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. শফিক (৩০) পাহাড়ি ঘোনায় নিজের পেয়ারা বাগান দেখতে যায়। এসময় একদল দূবৃর্ত্ত তাকে অপহরণ করে পাহাড়ে ভেতরে নিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী অপহৃতের পরিবার সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে দুপুর ২টারদিকে ঘরের ৪টি গরু,বসতভিটা বন্ধক, স্থানীয় মেম্বারসহ বিভিন্ন জনের নিকট হতে ধার-কর্জ করে সংগ্রহ করা ৬ লাখ টাকা নিয়ে হ্নীলা পানখালী-বাহারছড়া ঢালাপথের ঢলবইন্যা নামক পয়েন্টে গিয়ে মুখোশধারী অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের বুঝিয়ে দিয়ে গুরুতর আহত ও মুমূর্ষাবস্থায়  হ্নীলা পশ্চিম পানখালীর মৃত উলা মিয়ার ছেলে নজির আহমদ (৫৫) এবং নজির আহমদের ছেলে মো. হোছন (২৫)কে উদ্ধার করে বাড়িতে আনা হয়। তাদের সন্ধ্যারদিকে হ্নীলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক মোঃ রফিকুল ইসলামের নিকট চিকিৎসা নিতে আসে। এসময় তারা বলেন, অপহরণকারীরা মুখোশধারী হওয়ায় কাউকে চিনতে পারেনি। গত ৩ দিনের মধ্যে শুটকি দিয়ে ৩ বেলা খারাব দিয়েছে। যতবার বাড়িতে টাকার জন্য ফোন করেছে ততবার মেরে অজ্ঞান করেছে। যা প্রকাশ করার ভাষা আমাদের নেই।

ডাক্তার রফিকুল ইসলাম জানান, ভিকটিমেরা খুবই গরিব এমআরআই করতে পারেনি। এক্সরে করেছে তাতে দেখা যায় হাঁড় না ভাঙলেও মাংস কালো হয়ে গেছে। তাদের কমপক্ষে ৩ মাসের বিশ্রাম দরকার। 

স্থানীয় হ্নীলা ইউপি মেম্বার হোছাইন আহমদ বলেন, এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় কেউ এই অপহরণ চক্রের সাথে জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হবে। এই অপরাধী চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে। 

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান,গত কয়েকদিন ধরে প্রত্যন্ত এলাকায় যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক। আপাতত তা থেকে বাঁচতে এলাকার মানুষকে সংঘবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার টহল জোরদারের পাশাপাশি স্থানীয় কেউ এই ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত কিনা খতিয়ে দেখতে হবে। 

সাধারণ মানুষের ধারণা, প্রত্যন্ত এলাকায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার না থাকায় স্থানীয় কতিপয় মুখোশধারীদের ইন্ধনে দুবৃর্ত্তরা এসব অপতৎপরতা চালিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলেছে। এলাকাভিত্তিক অপরাধ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সমন্বয়ে তদারকি থাকলে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া অপরাধ প্রবনতা কমতে পারে বলে ধারণা করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে একটি সশস্ত্র গ্রুপ মরিচ্যাঘোনার পশ্চিমে পাহাড়ে ধানচাষ পাহারা দেওয়ার সময় স্থানীয় আবুল মঞ্জুরের ছেলে মো. শাহজাহান (৩৫), ঠান্ডা মিয়ার ছেলে আবু বক্কর (৪০) এবং আবু বক্করের ছেলে মেহেদী হাসান (১২)কে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। কিন্তু পাহাড়ে সশস্ত্র দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে একপক্ষ আরেক পক্ষকে ধরতে এসেছে সন্দেহ করে গোলাগুলিতে লিপ্ত হলে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় ফিরে এসে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। 


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.