বাগেরহাটে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মোরেলগঞ্জের জিউধরা ইউনিয়নের ৯৬ নং বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার। এ ঘটনার জেরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীরা। এ ঘটনায় যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর নানা গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এবং মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) তুহিন মণ্ডলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জের জিউধরা ইউনিয়নের ৯৬ নং বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার ৫ম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন হয়রানি করে আসছেন। গত ৫ জানুয়ারি পশ্চিম জিউধরা গ্রামের এক শিক্ষার্থী ননী গোপালের যৌন হয়রানির শিকার হলে ওই ছাত্রী বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। সে আর ওই বিদ্যালয়ে যাবে না এবং জোর করে পাঠালে আত্মহত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। ওই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর যৌন হয়রানির শিকার অন্য ছাত্রীরাও মুখ খুলতে শুরু করে। বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ময়না রানী শিকদারকে জানালেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা করেননি বলে অভিযোগে জানা যায়। ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, শিক্ষক ননী গোপাল হালদার এর আগে জয়বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিকালীন এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে স্থানীয়দের মার খেয়ে পরে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বর্তমান বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। শিক্ষক ননী গোপাল তার প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে জাপটে ধরলে ওই গৃহবধূ তাকে ঝাড়ূপেটা করেন। স্থানীয় আরেক বাসিন্দার মেয়ে সন্ধ্যায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মাঠে বসে ওই মেয়েকে জাপটে ধরেন প্রধান শিক্ষক। মেয়েটি বাড়িতে ফিরে ঘটনা জানালে মেয়ের বাবা ননী গোপালকে রাস্তায় ফেলে মারপিট করেন। এমন আরও অনেক ঘটনা রয়েছে শিক্ষক ননী গোপালের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাছাড়া তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক কারণে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ সম্পর্কে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) তুহিন মণ্ডল জানান, ননী গোপাল হালদারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তাদের সংশ্নিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্বন্ধে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানান, এ বিষয়ের অভিযোগ সম্বন্ধে তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।