নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আহ্বানে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে চলমান সংলাপে ড: কামাল হোসেনকে অংশ না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে গণফোরামের একাংশ। দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম একাংশের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু এই কথা জানান। বঙ্গভবন থেকে গণফোরামের এই অংশ সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছেন কিনা তার উত্তরে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন ‘গণফোরাম পেয়েছে’। তিনি বলেন ‘আমরা ড: কামাল হোসেনের সাথে আলাপ করেছি এবং তিনি আমাদের পরিষ্কার বলেছেন যে আমরা যাচ্ছি না।’

মন্টু বলেন তারা ড: কামাল হোসেনকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন সংলাপে অংশগ্রহণ না করার জন্য। গণফোরাম একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে চিঠিটি পড়ে শুনান।

ড: কামাল হোসেনকে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা সম্বোধন করে চিঠিতে লিখেন ‘আপনার পরামর্শ অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতির ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংলাপের অভিজ্ঞতার আলোকে গণফোরাম এর নির্বাহী পরিষদ এর সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ২রা জানুয়ারি রবিবার গণফোরাম রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয় ‘এদেশের মানুষ বিশ্বাস করে রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ কার্যত একটি নাটকীয় আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। চলমান সংলাপ দেশবাসীর কাছে পূর্বের মত চাতুর্যপূর্ণ সংলাপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কাজেই উক্ত সংলাপে গণফোরামের নামে অংশগ্রহণ করা অপ্রত্যাশিত এবং বর্তমান সরকারের অপশাসন ও জনগণের ভোটাধিকার হরণের রাজচালাকীর সহযোগী হিসাবে গণ্য করা হবে।’

‘এমতাবস্থায় গণফোরামের ঐতিহ্য এবং সুনাম অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে আপনাকে এবং গণফোরামের পক্ষে উক্ত সংলাপে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।’ চিঠির কপি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের দেওয়া হয়।    

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও  প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মহসিন রশীদ উপস্থিত ছিলেন। রোববার বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গণফোরামকে সংলাপে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

বিএনপি, কমিউনিষ্ট পার্টি, বাসদহ বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ ইতিমধ্যে সংলাপে না যাওয়া সিদ্ধান্তের কথাও কামাল হোসেনকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

গত ৩ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সভাপতি ও সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে ড. কামাল হোসেনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংলাপের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে গণফোরাম দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বর্তমান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চলমান সংলাপ একটি তামাশা মাত্র। যার মাধ্যমে কোনো কা্ঙ্খিত নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব নয়।’

‘ গণফোরাম মনে করে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের জন্য শুধুমাত্র শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই চলবে না, এর জন্য অপরিহার্য্ হলো জাতীয় ঐ্ক্যমতের সরকার। সেই সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাধিকারসহ জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’