হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মীরসরাই উপজেলার কৃষকের ফসলের মাঠ। যেদিকে তাকাই সেদিকেই হলুদ আর হলুদ। দিগন্ত জুড়ে যেন হলুদ ফুলের সমারোহ। দেখে মনে হবে যেন হলদে রাজকুমারীর গায়ে হলুদ। এই হলদিয়া মাঠে এসেছে প্রজাপতি, মৌমাছি, পোকামাকড় থেকে শুরু করে অন্যান্য পাখিরাও।
এমনই চোখ ধাঁধানো প্রকৃতির রূপ দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। যত দূর চোখ যায়, তত দূর দেখা যায় হলদে রঙের সরিষা ফুল। বিশাল এ মাঠ দূর থেকে দেখে মনে হয় বিশাল আকৃতির হলুদ চাদর বিছানো। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সরিষার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, নানা রঙের প্রজাপতিতে ভরে আছে সরিষার ক্ষেত। নীল, সবুজ, লাল-নীলের ডোরাকাটা বিভিন্ন রঙের প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে। কোথাও ঝলক দিয়ে উঠছে কালো ডানায় হলুদ-লালের মিশ্রণ। রঙ-বেরঙের প্রজাপতির এমন ডানা ঝাপটানো হৃদয়ে জাগাবে নবতর আনন্দ। প্রজাপতিরা এখানে আসে বিশ্রাম নিতে। অনেক দূর উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ানোর পর সরিষার মাদকতা তাদের আকৃষ্ট করে। প্রজাপতির সঙ্গে ভ্রমরও মধু খুঁজে ফিরছে এই ফুলে। এই সুযোগে মৌয়ালরা মৌমাছি চাষ করে এই মধু সংগ্রহ করছেন সরিষার মাঠে।
বর্তমানে সরিষা ক্ষেতের দৃষ্টিনন্দন এমন অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই গ্রাম বাংলায় ছুটে আসেন। সরিষা ক্ষেতও যেন একটি বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন গ্রামের সরিষার মাঠে হুমড়ি খেয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন শহুরে মানুষজন। সরিষার ঝাঁজালো ঘ্রাণে মুখরিত চারদিক। বেশিরভাগই ফুলে এই সময়ে গন্ধ থাকে না কেবল সরিষা ফুল ছাড়া। এ ঘ্রাণে ফুসফুসের উপকার হয়।
উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্র জানা যায়, উপজেলার ৬০ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছর থেকে ১০ হেক্টর বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। মীরসরাইয়ে উপজেলায় ১নং করেরহাট ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, ২নং হিঙ্গুলী ১২ হেক্টর, ৮নং দুর্গাপুর ১২ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘মীরসরাই উপজেলায় এই বছর ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১০ হেক্টর বেশি। কৃষকদের মাঝে সরিষার বীজ বিতরণ করায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।’