× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

১০ ডিসেম্বর ‘অবরুদ্ধ’ হতে পারে ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:১০ এএম

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকাতে গণসমাবেশের আগে-পরে রাজধানী ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে কড়া পাহারা বসবে নেতাকর্মীদের। এর মাধ্যমে ঢাকাকে প্রায় ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।  

নেতারা বলছেন, বিএনপির অন্য বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে বড় বাঁধা ছিল পরিবহন ধর্মঘট ডেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা। তবে ঢাকায় পরিবহন বন্ধের পথে না হাঁটার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণ- দুই অংশেই নেতাকর্মীদের সতর্ক প্রহরা রাখার ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছে আওয়ামী লীগের মধ্যে।   

এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অধীনে থাকা ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড এবং ১টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে সতর্ক পাহারা বসানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে স্ব স্ব থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের নেতৃত্বে ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে সুদৃঢ় অবস্থান গড়ে তোলা হবে। নিজ নিজ থানা ও ওয়ার্ড সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবেন প্রতিটি এলাকায়। দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও এই অবস্থানে অংশ নেবেন। ওয়ার্ড ও থানার এমন অবস্থান তদারকি করার জন্য থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ঢাকা মহানগর উত্তরের ৭৫ জন নেতাকে এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একজন নেতা সংবাদ সারাবেলাকে বলেছেন, আগে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বড় একটি সমাবেশ করার পরিককল্পনা ছিল তাদের। তবে সংঘাত এড়াতেই দল ও সরকার সেটাতে অনুমতি দেবে বলে মনে হয় না। এই অবস্থায় সমাবেশের বিকল্প হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারা বসানো হবে।

অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের অধীনে ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। ৭৫টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারা বসানোর প্রস্তুতি চলছে। আর সংশ্লিষ্ট থানার মূল পয়েন্ট কিংবা মোড়ে থানা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা অবস্থান নিয়ে তদারকি করবেন। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও নয়াপল্টন- দুই এলাকাই দক্ষিণের আওতায় পড়ায় এখানে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হবে। নেতাকর্মীেেদর বড় অবস্থান থাকবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, গুলিস্তান, মতিঝিল শাপলা চত্ত্বর প্রভৃতি এলাকা। প্রতিটি ওয়ার্ডের দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও অবস্থান নেবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীর একজন নেতা জানান, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেবে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। কাউকে ঢাকার ভেতর শান্তি নষ্ট করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তবে কোনো নাশকতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা হলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিহত করা হবে।    

তবুও শঙ্কা, আস্থা পাচ্ছে না ক্ষমতাসীনারা: এর আগেই ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে বিএনপিকে নানামুখী ‘ছাড়’ দিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগ। এরপরও বিএনপির ওপর ‘আস্থা’ পাচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। অতীতে বিশেষ করে নির্বাচন ঠেকানো ও সরকার পতন আন্দোলনের নামে ২০১৩-২০১৫ সালে বিএনপির নাশকতা-নৈরাজ্য এবং আগুনসন্ত্রাসের তিক্ত অভিজ্ঞতাই রীতিমতো আশঙ্কা তৈরি করেছে তাদের মধ্যে। 

আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কা, গণসমাবেশের নামে ওইদিন বিএনপি রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে চাইছে। আওয়ামী লীগের ভেতরে এমন আলোচনাও রয়েছে, ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি থেকে ঢাকা মহানগরীতে ‘লাগাতার অবস্থান’ এর মত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বিএনপি। এমনকি সারাদেশ থেকে লোকজন এনে ‘ঢাকা অবরোধ’ কিংবা ‘অবস্থান কর্মসূচি’ ঘোষণা করতে পারে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে ঢাকার ভেতর থেকেও বড় সাড়া পাবে বিএনপি। যা সরকার পতনের বড় আন্দোলনে রূপ নিতে পারে। বিএনপি ঢাকায় কোনো ‘ঝামেলা সৃষ্টি’ করলে হেফাজতে ইসলামকে মতিঝিল থেকে যেভাবে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে এর চেয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

মূলত এই কারণেই গণসমাবেশের আগে-পরে গোটা রাজধানীতে সরকারসমর্থক নেতাকর্মীদের সতর্ক প্রহরা রাখা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের জন্য সতর্ক অবস্থানে থাকার কোনো বিকল্পও দেখছেন না ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। তাই নাশকতাময় পরিস্থিতি তৈরি হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার পাশাপাশি তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গোটা ঢাকা মহানগরীতে নেতাকর্মীদের সতর্ক প্রহরা রাখার এমন পরিকল্পনা নিচ্ছে দলটি।    

প্রসঙ্গত, বিএনপির গণসমাবেশ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১০ ডিসেম্বরের আগে-পরে কেউ যেন পরিবহন ধর্মঘট না ডাকে- সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশ আসে। ওইদিনই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখও দু’দিন এগিয়ে এনে ৬ ডিসেম্বর পুনর্নিধারণ করা হয়। সেই সঙ্গে ওই সম্মেলনের দু’দিনের মধ্যে সম্মেলন মঞ্চ ও প্যান্ডেলসহ আনুষঙ্গিক সকল স্থাপনা সরিয়ে নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাতে সেখানে বিএনপি গণসমাবেশের মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণসহ গণসমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পায়। 

যা বলছেন নেতারা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১০ ডিসেম্বর সতর্ক পাহারায় থাকবে। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে আন্দোলনের নামে সহিংসতার উপাদান যুক্ত করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সমুচিত জবাব দেবে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের  সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারায় থাকবেন। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.