× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সেবা দিয়ে মানুষকে খুশি করতে চান ডা. আয়শা আক্তার

২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০৯ এএম

শৈশব থেকেই কেন যেন মানুষের সেবা করার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে চেয়েছেন আয়শা আক্তার। সেই চাওয়াটা তখন কেবল চাওয়াই ছিল। একটু যখন বড় হতে থাকেন তখন চাওয়াকে পাওয়াতে রূপান্তরিত করতে কীভাবে কাজ করবেন তাই ভাবছিলেন। মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন। সেই স্বপ্নের মাঝে মেয়ে খুঁজে পান সেবা করার ব্রত। এখন শুধু সেবা করেই নয়, সেবার মাধ্যমে মানুষকে তৃপ্ত করে খুশী করতে চান ডাক্তার আয়শা আক্তার।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে সেবা গ্রহীতাদের সামনে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছেন। তার সান্নিধ্যে যারা এসেছেন তারা সবাই সদা হাস্যোজ্জ্বল আয়শার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়েছেন।

গত সপ্তাহে তার কার্যালয়ে কথা হচ্ছিল আয়শা আক্তারের সঙ্গে। তার কাছে যারা আসেন তাদের বাড়িতে তৈরি নাস্তা দিয়ে আপ্যায়ন করেন। শীতের সময় বলে পিঠেপুলি থাকে সেই আয়োজনে। আর সহকর্মীরা মাঝেমধ্যেই এসব আয়োজনের স্বাদ পান। যেমন কাজের জন্য সহযোগিতা পান তেমন যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকেন সবার।

আয়শা জানান, পরিবেশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটা মানুষ কীভাবে বড় হবে তার অনেকটা নির্ভর করে তার চারপাশের মানুষ ও পরিবেশের ওপর। দায়িত্ব নিতে শিখতে হয় ছেলেবেলা থেকে আর সততা ও পরিশ্রমী হতে হবে সবার আগে। তবেই একটা মানুষ ঠিক তার জায়গা করে নিতে পারবে। এমন দর্শন নিয়ে কথা বলা আয়শা আক্তারের বেড়ে উঠা, পড়াশুনা সবই ঢাকাতে। চাকুরে বাবা মো. মজিবুর রহমান ও গৃহিণী মা শামসুন্নাহারের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো আয়শা চারপাশে মেয়েদের অবস্থান বদলে যেতে দেখেছেন ইতিবাচক ভাবনার মধ্যদিয়ে। ২২তম বিসিএস-উত্তীর্ণ হয়ে চলে যান ঢাকার বাইরে। চিকিৎসক স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির সহযোগিতা পান সবসময়। একজন মেয়ের পরিবার ছেড়ে ঢাকার বাইরে যাওয়া একটা চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন আয়শা। আর বিশ্বাস করেন, যে মেয়ে কাজকে গুরুত্ব দিবেন সে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন।

তিনি বলেন, দায়িত্ব না নিলে উন্নতি হবে না। তিনি মনে করেন, এই সময় মেয়েদের এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। মেয়েদের সব পেশাতে, সব পদে নিযুক্ত করায় নারীর ক্ষমতায়নে এগিয়ে এসছে বাংলাদেশ। প্রশ্ন করলাম, প্রায়ই শোনা যায় চিকিৎসকরা বিশেষ করে নারী চিকিৎসকরা ঢাকার বাইরে যেতে চায় না। উত্তরে বলেন, এরকম ছিল কিন্তু এখন পরিবেশটা অনেক বদলে গেছে। সরকার স্বামী-স্ত্রী উভয় চিকিৎসক হলে একই জায়গাতে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বসবাসের অনেক সুবিধা করা হয়েছে।

ঢাকার বাইরের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, এখন মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই এগিয়েছে। গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসা দিতে হবে- এ বিষয় এখন পরিবার সচেতন হয়েছে। একজন প্রশাসক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে পুরুষ সহকর্মীর সহযোগিতা কেমন পান জানতে চাইলে জানান, নারীকে প্রমাণ করতে হবে সে কাজ করতে পারে। সততা ও পরিশ্রম তাকে সাহসী করে, ফলে নিজের দায়িত্ব সে পালন করতে পিছপা হন না। পুরুষ কিন্তু সব জায়গাতে নারীকে মানতে চায় না। কিন্তু কাজ জানলে তাকে আটকেও রাখতে পারে না।

এক সন্তানের মা আয়শা বলেন, সন্তানের জন্য মায়ের দায়বদ্ধতা সবচেয়ে বেশি। আমি আমার কাজকে ভাগ করে নেই। কতটা পেশাকে, কতটা সন্তানকে আর কতটা সামাজিকভাবে ব্যয় হবে তা নির্ধারণ করা থাকে। যদিও কোভিড, ডেঙ্গুর পাদুর্ভাব বেড়ে উঠার সময় এসব রুটিন তছনছ হয়ে যায়। চিকিৎসক হওয়ার পর এক সময় সোনোলজিস্ট পেশায় যান আয়শা। পাবলিক হেলথে মাস্টার্স করেন। আমেরিকান এআরডিএমএসও করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমেও কাজ করেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা নিজেদের পরিবার ছেড়ে সময় ভুলে কাজ করেছি। কোভিড মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি জেনেও রোগীদের সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকরা। এখন রোগটা একটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

আয়শা মনে করেন, মেয়েদের আজকের এই অবস্থানে বেগম রোকেয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সকল কর্মজীবী নারী ও তার মায়ের অবদান আছে। নারীর জন্য এই অবস্থান ধরে রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন এই দেশে নারী-পুরুষ সমমর্যাদায় কাজ করবেন। শুধু নারী বলে পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার হবে না কোনো নারী।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.