রাজধানীর বাঙলা কলেজে এক ছাত্রীকে একা পেয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্র কলেজটির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ছাত্র। এ ছাড়া কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। আর ভুক্তভোগী ছাত্রী ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী। 

বুধবার (১৮ মে) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে বাঙলা কলেজের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। এই বিষয়ে বাঙলা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

ছাত্রী অভিযোগ করেন, গতকাল আমি নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় লাইব্রেরি থেকে পড়া শেষ করে ফেরার পথে সিঁড়িতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে দেখা হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে সে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিলে সে আমায় জড়িয়ে ধরে এবং অসৎ উদ্দেশে গায়ে হাত দেয়। আমাকে খুব বাজেভাবে হয়রানি করে। আমি চিৎকার করলে সে আমার মুখ চেপে ধরে। 

ঐ শিক্ষার্থী আরো বলেন, সে সময় দুপুরের খাবারের সময় আর নতুন ভবন পুরোপুরি চালু না হওয়ায় কোনো শিক্ষার্থী ছিলো না। এই ঘটনায় এই শিক্ষার্থী ও তার পরিবার শঙ্কিত বলেও জানায়। 

ঘটনার পর অভিযুক্ত হাবিব ছাত্রীকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে লিখেন, ‘ক্ষমা চাইছি, দয়া করে ক্ষমা করে দাও। আর জীবনেও এমন অপরাধ হবে না। আমি সত্যিই লজ্জিত।’ 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাবিব বলেন, এটা মিথ্যা কথা। আমার সাথে এরকম কিছু হয়নি। তবে এমন ঘটনা না ঘটলে ঐ ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলেন কেন?- এমন প্রশ্নে হাবিব ভাত খাচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফেরদৌসী খানকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। পরে উপাধ্যক্ষকে কল করলে তিনি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। 

অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঙলা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মিটুল চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়টা নিয়ে বসবো। আমরা কথা বলবো।

দারুস সালাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই ধরনের কোনো অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান হাবিব এর আগেও একাধিকবার ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুবেলকে কলেজ ক্যাম্পাসে কুপিয়ে আহত করেন এই হাবিব, যে মামলা বর্তমানে দারুসসালাম থানায় চলমান। এ ছাড়াও গত ১২ এপ্রিল বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতির দুই নেতাকে কলেজ ক্যাম্পাসে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

হাবিব বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক (ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া) এবং বর্তমানে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক চৌধুরীর অনুসারী।

ছাত্রলীগ নেতা রুবেলকে কুপিয়ে আহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে রুবেল বলেন, আমার শরীর দিয়ে রক্ত ঝরেছে। আমি এখনো বিচার পাইনি। পুলিশ আসামি ধরছে না। পুলিশ বলে, আমার দেওয়া নাম-ঠিকানা নাকি ভুয়া। অথচ আসামিরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায়। আমি এর বিচার চাই।