× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আধুনিক ও যুগোপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়তে সরকারের উদ্যোগ সফল হোক

২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৩৮ এএম । আপডেটঃ ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৫:৫৫ এএম

‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে গত ২৩ থেকে আজ ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। এ সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পরম নিষ্ঠার সাথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই কথার প্রতিধ্বনিও করেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ। গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, বন্ধু হিসেবে জনগণের পাশে থাকুন। মানবিক পুলিশ হয়ে এবং জনগণের সেবা প্রদান করে সত্যিকারের শক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য তাদের আস্থা অর্জন করে দায়িত্ব পালন করুন।

পুলিশ জনগণের কতটা বন্ধু হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। এমনও শোনা যায় বাঘে ছুলে এক ঘা আর পুলিশ ছুলে বত্রিশ ঘা। তাই পারত পক্ষে কেউ পুলিশের কাছে কেউ যেতে চায় না। তাছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে নিরপরাধী মানুষকে হয়রানির অভিযোগও পুরনো। অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধ ও বেআইনি কার্যক্রমে যুক্ত থাকার খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিš‘ তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো খুব একটা গণমাধ্যমে আসেনা। অবশ্য পুলিশ সপ্তাহের এক অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রধান বলেছেন, যে সব পুলিশ বেআইনি কাজে জড়িত থাকবে, তাদের পুলিশ বাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হবে।

দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তৃণমূল পর্যায়ে পুলিশ জনগণের মাঝে কাজ করে। তাই বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। লোকবল বাড়ানো হয়েছে, যৌক্তিক সব ধরনের সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া সময়োপযোগী পুলিশি সেবা প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। ফলে পুলিশের কার্যক্রম গতিশীল হবে এবং জনগণ সহজেই কাক্সিক্ষত সেবা পাবে। এক কথায় বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক ও উন্নত দেশ উপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের ফলে পুলিশ বাহিনী এখন দক্ষ তদন্ত পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ পুলিশের এক পরিসংখ্যানে উল্লেখ রয়েছে, ২০২০ সালে মামলার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৬। অর্থাৎ এক বছরে ৩৭ হাজার ৭৫৮টি মামলা (১৬.৭ শতাংশ) কমে যায়। ২০২১ সালে অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদক উদ্ধারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময়ে অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং মাদক দ্রব্য উদ্ধারসংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বেশি হওয়ায় তা সামগ্রিকভাবে মোট মামলার সংখ্যার ওপর প্রভাব ফেলে। পুলিশের ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালে দেশে মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫১০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে উদ্ধারজনিত মামলার সংখ্যা বেশি। এই সময়ে কমেছে বড় অপরাধের মামলা। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের বড় সাফল্য এসেছে। পুলিশের তৎপরতায় জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়ে জঙ্গিবাদকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের এই সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেড় বছরে ৩১৭ জন ব্যক্তিকে জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলো, যেমন সিআইডি ও পিবিআইয়ের পাশাপাশি পাশাপাশি জেলা ও মেট্রো ইউনিটগুলো মামলা নিষ্পত্তিতে মুনশিয়ানা দেখিয়েছে। এসব মামলার তদন্ত বাংলাদেশ পুলিশ সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়নের পরিচয় দিয়েছে।
তাই জনগণের মাঝে পুলিশের ওপর আস্থা রাখা এখন সময়ের দাবি। আর পুলিশের উচিত থানায় জনগণ কোনো কাজে গেলে তাকে যথাযথ ভাবে সাহায্য করা। অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করা। তাছাড়া থানার পরিবেশও জন-বান্ধব করা জরুরি। পুলিশ দেখে যেন জনগণ ভয় না পায়, বরং আস্থার সাথে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহযোগী হয়ে উঠতে পারে।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন অনেক এগিয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে সরকার দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য কাজ করছে। দেশ ইতোমধ্যে  টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। তাই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থি’তি স্থিতিশীল রাখা খুবই জরুরি। দেশে আইনের শাসন না থাকলে সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায়। দুর্নীতির কালো থাবা বিস্তার করে। তাই সরকারের পুলিশ বাহিনীকে সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা অভিনন্দন যোগ্য। এখন প্রয়োজন বাহিনীর নীতি নির্ধারক ও সদস্যদের আন্তরিকভাবে কাজে আত্মনিয়োগ করে দেশ ও জাতির উন্নয়ন অগ্রগতিতে যথাযথ অবদান রাখা।



Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.