× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নাইক্ষ‍্যংছড়ির ফুলঝাড়ু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে

নাইক্ষ‍্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:২৯ এএম । আপডেটঃ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:০৩ এএম

পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় ফুলঝাড়ু। এটি পার্বত্য অঞ্চলে এখন প্রধান কাঁচামাল ফুল ঝাড়ু গাছ। বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি ফুলঝাড়ু ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুলঝাড়ুর চাহিদা বাড়ছে।কারণ অন্যান্য ঝাড়ুর চেয়ে পার্বত্য অঞ্চলের ফুল ঝাড়ুর গুণগতমান ভালো ও দেখতে সুন্দর, টিকে বেশি দিন ও দামেও কম। তাই দেশের অন্যান্য জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকেই ফুলঝাড়ু সংগ্রহ করেন। পাহাড়ের এ ফুলঝাড়ু বিক্রির ওপর কয়েক হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভর করে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে এই ফুল ঝাড়ু।

নাইক্ষ্যংছড়ির পুরাতন বাসস্টেশনের পাশে বিশাল খোলা মাঠসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ফুলঝাড়ু শুকানো হচ্ছে। উপজেলার স্থানীয় বাজার ও বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লি থেকে সংগ্রহ করা ফুলঝাড়ু সারিবদ্ধভাবে শুকানোর প্রক্রিয়া চলছে পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লীতে। ১০-১৫ দিন শুকানোর পরেই এসব ফুলঝাড়ু পাইকারীর মাধ্যমে গাড়ি যোগে পৌঁছে যাবে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে।

নাইক্ষ্যংছড়ি পুরাতন স্টেশন এবং চাকঢালা এলাকায় রয়েছে ফুলঝাড়ুর আড়ত। উপজেলার সদর ইউনিয়নের মসজিদ ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা আড়তদার মোঃ ইসমাঈল ফুলঝাড়ু ব্যবসা করে আছেন ২ যুগেরও বেশি। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে মাঠ পর্যায়ে ফুলঝাড়ু সংগ্রহ করে তা প্রক্রিয়াজাত করে দেশের বিভিন্ন জেলাতে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছান। এভাবে উপজেলার অনেক ব্যবসায়ী ফুলঝাড়ুর ব্যবসা করেন।

সম্প্রতি এ পেশার সঙ্গে পাহাড়ি-বাঙালি জনগোষ্ঠীর লোকজনও জড়িয়ে পড়েছেন। সময়ের ব্যবধানে পাহাড়ের ফুলঝাড়ুতে সমৃদ্ধ হচ্ছে পাহাড়ের অর্থনীতি। সমতলের পার্বত্য এলাকার পাহাড়ে ফুলঝাড়ুর কদরও অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

এক হাত দুই হাত বদলে নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলঝাড়ু রপ্তানি হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইলের মতো বড় বড় জেলা শহরে। পাহাড়ের বেশির ভাগ স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা জুমচাষের ওপর নির্ভরশীল। তবে জুমচাষের ফসল ঘরে তোলার পর পৌষ মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ঝাড়ুফুল সংগ্রহ করে বেচাবিক্রির কাজে ব্যস্ত থাকে। এতে করে তাদের বাড়তি উপার্জনে ঘরে ঘরে আনন্দ উৎসব। সাধারণত ৭-১০টি ফুলে একটি আঁটি। আর এমন একটি আঁটি পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ১০-১২ টাকায়। এভাবেই ১০০ আঁটি ফুলঝাড়ু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার দুইশ টাকায়।

আড়ৎদার মো. ইউনুছ ও মো. ইসলাম বলেন, অনেকেই পাহাড় থেকে সংগ্রহের পর অধিক মুনাফার জন্য তা নিজেরাই খুচরা বাজারে সরাসরি বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। আবার অনেক আড়তদার বা পাইকারদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে ফুলঝাড়ু কিনে থাকেন।

সাধারণত একজন মাঠপর্যায়ের সংগ্রাহক এক মৌসুমে পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা ফুলঝাড়ু বিক্রি করে আয় করে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের মতে, পুঁজি দিয়ে কৃষিকাজের চেয়ে বিনা পুঁজিতে বছরে তিন মাস ফুলঝাড়ু সংগ্রহে অধিকতর লাভজনক। তবে আগের চেয়ে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেক আড়ৎদার অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকে ফুলঝাড়ু সংগ্রহের জন্য।

এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের জন্য সরকারিভাবে ঋণের ব্যবস্থা করা গেলে আগামীতে এ ব্যবসার প্রসারতা আরও বৃদ্ধি পাবে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাসহ দেশে অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে এ ফুলঝাড়ু। উপজেলা হতে দেশের বিভিন্ন জেলাতে পাঠানোর জন্য একটি ফুলঝাড়ু প্রতি ব্রুমে সরকারিভাবে জমা দেওয়া লাগে ৩৫ পয়সা করে। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে এ ঝাড়ু পরিবহন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে নেওয়া হচ্ছে। আর এ পরিবহনের অনুমতির জন্য সরকারিভাবে আমরা রাজস্ব আদায় করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, প্রতি ফুলঝাড়ুর ব্রুম প্রতি ৩৫ পয়সা করে রাজস্ব সরকারের ফান্ডে জমা হয়; যে হিসাবে প্রতিটি ট্রাকে আমরা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত রাজস্ব সরকারের তহবিলে জমা দিচ্ছি। এতে অর্থনৈতিকভাবেও অবদান রাখছে পাহাড়ের ফুলঝাড়ু। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ শফিউল্লাহ জানান, এই ফুলঝাড়ুর ব্যবসা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.