× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আলু নিয়ে চিন্তায় নীলফামারীর কৃষক

নীলফামারী প্রতিনিধি

০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:২৫ এএম

ভরা মৌসুমে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নীলফামারীর কৃষকরা। লাভ তো দুরের কথা খরচ তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন হাজারো কৃষক। যার কারণে জমি থেকে আলু তুলতে চাচ্ছেন না তারা। কৃষকরা বলছেন বিঘা প্রতি আলু উৎপাদনে খরচ ১৫-১৬ হাজার টাকা, যেখানে বর্তমান বাজার দর ৫টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে বিঘা প্রতি আসে ১২টাকার টাকার কিছু বেশি। সে হিসেবে লোকসানে থাকতে হবে আলু নিয়ে।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে এখোনো আলু তোলা ও বেশি দামে বিক্রি হওয়ার অনেক সময় রয়েছে। সে কারণে কৃষকদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে বলে প্রত্যাশা দফতরটি কর্মকর্তাদের। নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের আলু চাষী রশিদুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে আলু করেছি আমি। এখন বাজার দর অনেক খারাপ। পাঁচ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচ টাকায় বিক্রি হ”েছ জমিতে। এই দামে বিক্রি করলে লাভ তো দুরের কথা খরচ উঠবে না। পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বালাপাড়া এলাকার কৃষক জগদিশ রায় জানান, এক বিঘা জমিতে আলু করেছি আমি। ১৫হাজার টাকার কাছাকাছি খরচ হয়। এবার দাম কম মনে হ”েছ। আলুর ফলন বাম্পার হয়েছে। বাজার তর ভাবিয়ে তুলছে আমাকে।

কৃষি বিভাগ সুত্র জানায়, এবারে জেলায় ২২হাজার ৩’শ হক্টরে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ৩১০ হেক্টরে। যেখানে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪লাখ ৪৯হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন।

এদিকে আগের মৌসুমে (গেল বছর) ২২হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ উৎপাদন হয় ৪লাখ ৪৮হাজার ১৫০মেট্রিক টন।
এই এলাকায় সাগিতা, সেভেন, কারেজ, রোমানা, ডায়মন্ড, গ্রানুলা, এ্যাস্টোরিজ, বিরি আলু ৩৭, ৫৭সহ বিভিন্ন জাতের আলু আবাদ হয়ে থাকে। এরমধ্যে সেভেন, গ্রানুলা, সাগিতা, কারেজ জাতের আলু বেশি আবাদ হয়ে থাকে।

জেলা শহরের পাইকারী আলু ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন জানান, আলুর এখন ভরা মৌসুম। সে কারণে দাম কম। আমরা পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ টাকায় কিনছি আর বিক্রি করছি ছয়টাকা দরে। তবে মাসখানিক পরে আলুর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের দুরাকুটি গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এবারে তিন বিঘা জমিতে আলু করেছি। যেখানে বিঘা প্রতি ১৫হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। আলু বিঘা প্রতি ৭০ কেজির ৩৫বস্তা হয়েছে। পাঁচটাকা কেজিতে বিক্রি করলে আসে ১২হাজার টাকার কিছু বেশি। সে হিসেবে জমিতে যে খরচ হয়েছে সেটি আসছে না। লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে এবারে।

নিতাই ইউনিয়নের পানিয়াল পুকুরের কৃষক আব্দুল জলিল আবাদ করেছেন দুই বিঘা জমিতে। তিনিও বর্তমান দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, গতবছর এই সময়েও ভালো বাজার ছিলো কিন্তু এবার অনেক কম। কৃষকরা তাৎক্ষনিক মুল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন কিন্তু সংরক্ষণের বিষয়টি ভাবেন না। সংরক্ষণ করলে লাভবান হওয়া যায়।
তিনি বলেন, এই এলাকায় আরো হিমাগার স্থাপন প্রয়োজন। তাহলে কৃষকরা হাতের নাগালে আলু সংরক্ষণে উদ্যোগী হবেন।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী সফিকুল আলম ডাবলু বলেন, এই জেলায় যে পরিমান আলু উৎপাদন হয়, তা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে। কিন্তু কৃষকরা আলু দাম পান না।

আমি মনে করি সরকারী ভাবে আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা এবং আলু দিয়ে তৈরিকৃত খাদ্যদ্রব্য কারখানা স্থাপন জরুরী। তাহলে আলুর ব্যবহার বাড়বে এবং আলুর খাদ্যদ্রব্যও পাওয়া যাবে এই এলাকায়। সেক্ষেত্রে আলুর বাজার দরে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, আপাতত বাজার দর কম কিন্তু এই অবস্থা থাকবে না। যেভাবে হোক আলুগুলোকে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে সে কারণে ওই এলাকায় আলু ভালো ফলন হয়নি। এসব বিবেচনা করে আলু সংরক্ষণ করে রাখলে মাস দুয়েক বা তিনেক পর ভালো দাম আসবে। তিনি বলেন, জেলায় ১১টি হিমাগার রয়েছে। এগুলোতে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে আলু রাখার জন্য।  এছাড়া সরকারী ভাবে বিএডিসি’র বীজ উৎপাদন খামারে একটি বীজ হিমাগার স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। সেটি হয়ে গেলে অনেক উপকৃত হবেন কৃষকরা।
















Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.