ক্রমশই বিলীন হয়ে যাচ্ছে গোলগাছ। পাওয়া যাচ্ছেনা গুড়ের কাঙ্খিত মূল্য। এতে বিপাকে পরেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গোলচাষীরা। তাই অনেকেই করেছেন পেশার পরিবর্তন। ফলে বছরের বারোমাস মূল্য ঠিক রাখাসহ সরকারীভাবে আন্ধারমানিক নদীর তীরে গোলগাছের বনায়নের দাবী গোলচাষীদের।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ, ধুলাস্বার এবং মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানের আবাদি জমিতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে গোল বাগান। বছরের ছয় মাস প্রায় দুই দশক ধরে গোলগাছের রস দিয়ে গুড় তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করছে দুই শতাধিক পরিবার। প্রতিনিয়ত বিকালে গাছের ডগা কেটে হাড়ি পাতেন চাষীরা। রাতভর রসে হাড়ি ভড়ে উঠলে সূর্যদয়ের আগেই এসব রস সংগ্রহ করেন চাষীরা। পরে পাতালে জাল দিয়ে তৈরী করা হয় গুড়। দশ লিটার রসে তৈরী হয় এক কেজি গুড়। আর এসব গুড় বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে দেড়শ টাকা কেজি দরে। ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এ গুড়ের কাঙ্খিত মূল্য পাচ্ছেনা বলে দাবি চাষিদের। এছাড়া এসব জমিতে প্রতিনিয়ত লবন পানি প্রবেশ না করায় মরে যাচ্ছে গোলগাছ। ফলে বর্তমানে বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী গোলবাগান। তাই নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের আন্ধারমানিক নদীর তীরে গোলের চারা রোপন করে চাষিদের তত্ত্বাবধানে দেয়ার দাবি তাদের। দক্ষিনাঞ্চলের এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিবে সরকার এমন প্রত্যাশা সকলের।
নবীপুর গ্রামের গোলচাষী লিপি মিত্র জানান, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের যত সব স্থানে গোলগাছ আছে কোথাও লবন পানি প্রবেশ করেনা। তাই অনেক স্থানেরই গোলগাছ মরে যাচ্ছে। যেমন আমরাই আগে ৫০ থেকে ৬০ কেজি রস পেতাম। এখন ২০ থেকে ২৫ কেজি করে রস পাচ্ছি। একই এলাকার অপর গোলচাষী সজল মিয়া জানান, এখন আর আগের মতো রস পাচ্ছিনা। আন্ধারমানিক নদীর চরে গোল বাগানের গাছ রোপন করে আমাদের আমাদের তত্ত্বাবধানে দিলে আমরা দেখে শুনে বড় করতে পারব।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ জানান, আগের থেকে গুড়ের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। তাই কৃষি বিভাগকে লবনাক্ত এলাকায় গোলচারা রোপনের অনুরোধ জানাচ্ছি। গোলচাষীদের গুড়ের মূল্য দাম ঠিক রাখাসহ সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি অফিসের বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লক্ষমাত্রা ঠিক করে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আন্ধারমানিক নদীর তীরে গোলচারা রোপনের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।