× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ফেনীতে ড্যান্ডিতে আসক্ত হচ্ছে পথশিশুরা

ফেনী প্রতিনিধি

২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৫১ এএম

ফেনীতে নেশা জাতীয় দ্রব্য ড্যান্ডিতে আসক্ত হচ্ছে পথশিশুরা। অসাধু বিক্রেতারা অধিক মুনাফার লোভে পথশিশুদের কাছে এসব নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া নেশার টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে শিশুরা চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলেও জানা গেছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, মাদকের তালিকায় এ নেশার নাম না থাকায় সঠিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ‘ড্যান্ডি’ নামক এই নেশা জাতীয় দ্রব্যটি রাবার, চামড়াজাত দ্রব্য বা জুতা ও ফার্নিচার তৈরিতে ব্যবহৃত এক ধরনের আঠা ড্যানড্রাইট অ্যাডহেসিভ বা ড্যান্ড্রাইট (গাম)। শহরের বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের দোকানে সলিউশন নামে এসব আঠা জাতীয় দ্রব্য ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ফেনী শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা ট্রাংক রোড দোয়েল চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যেই নেশা করছে পথশিশুরা।

ফেনী রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকা এসব পথশিশু ঘাড়ে চটের বস্তা নিয়ে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ঘুরে বেড়ায়, কুড়িয়ে পাওয়া প্লাস্টিক, লোহা কিংবা পুরোনো জিনিস বিক্রি করে ও মানুষের কাছে হাত পেতে যে আয় হয়, তা দিয়ে খাবার কিনে খায় এবং বাকি টাকা দিয়ে নেশা করে। নেশায় আশক্ত এই শিশুদের বয়স ৮ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। হাতে পলিথিনের ব্যাগ থাকা পথশিশু আরিফ জানায়, যেখানে লোকজন কম সেখানে বসে ড্যান্ডি খাইতাম, এখন মাঝে মধ্যে খাই। ড্যান্ডি খাইলে মাথা ঘুরে, ক্ষুধা লাগে না।

নেশায় আসক্ত আরেক কিশোর সৌরভ জানায়, আগে আমরা ভিক্ষা করতাম, এখন আমাদের মানুষ ভিক্ষা দেয় না। তাই লেবু-আনারসের গাড়ি থেকে লেবু-আনারস চুরি করি। এসব বিক্রি করে আমরা প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা পাই। আমাদের বড় ভাই এলে তাকে আমাদের চুরির ভাগ দিতে হয়। ভাগ না দিলে সে আমাদের মারে। শহরের রেলস্টেশন এলাকার এক পথশিশু জানায়, সে তার আরেক বন্ধুর কাছ থেকে দেখে এখন নিয়মিত এ নেশা করে। এ গামের মধ্যে একটা ঘ্রাণ আছে সে ঘ্রাণ নিলে তার অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। পলিথিনের ভেতরে গাম রেখে, পলিথিনের মুখে নাক দিয়ে এই নেশা করা হয়। এর ভেতরে একটা মিষ্টি ঘ্রাণ থাকে। এটা মাথায় গিয়ে এক ধরনের অনুভূতি তৈরি করে।

ফেনী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা জানান, এ নেশার ফলে এসব শিশু নানা রোগে আক্রান্তসহ দ্রুত কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। তাদের এই পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনসহ সবাইকে কাজ করতে হবে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমএ) ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এই গামের ঘ্রাণ শরীরের যেসব জায়গায় গিয়ে পৌঁছায়, সেসব জায়গার কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়। আর কোষ নষ্ট হওয়ার কারণে মস্তিষ্কের কাজে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক এসআই বলেন, ‘এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবুও এমন ঘটনায় পুলিশ বসে নেই, এমন দেখলেই শিশুদের উদ্ধার করে তাদের মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী পরিচালক বলেন, ‘এ গামটি মাদকের তালিকায় নেই, সে কারণে এটা নিয়ে আমাদের কোনো ধরনের অভিযান চলমান নেই। তাও এ বিষয়ে খবর পেলে অভিযান পরিচালনা করব।’

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.