হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের কচুয়া গ্রামে সংকটাপন্ন একটি চিতা বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যার পর উল্লাস করেছেন স্থানীয় লোকজন। এ নিয়ে একই মাসে দুটি বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনা ঘটল ওই গ্রামে। শনিবার দুপুরে বিড়ালটিকে হত্যা করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা মৃত বিড়ালটিকে উদ্ধার করেছেন। তারা চুনারুঘাট থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সকালে হঠাৎ কয়েকজন ব্যক্তি চিতা বিড়ালটিকে গ্রামের পাশে একটি ঝোপে দেখতে পান। তারা এটিকে বাঘের বাচ্চা বলে গ্রামবাসীর মধ্যে প্রচার করেন। এতে লোকজন ধাওয়া করে একপর্যায়ে বিড়ালটিকে পিটিয়ে হত্যার পর মিছিল করেন। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে তারা মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, স্থানীয়রা এটিকে বাঘ মনে করে মেরে ফেলেছেন। অনেকে এটিকে মেছো বিড়ালও মনে করতে পারেন। কিন্তু এর প্রকৃত নাম হচ্ছে ‘চিতা বিড়াল’। বিরল প্রজাতির প্রাণীটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট অঞ্চলে কিছুসংখ্যক রয়েছে। এটি কখনো মানুষকে আক্রমণ করে না।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে শেয়ালের কামড়ে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছিলেন। এরপর আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তাদের বলেছিলাম। তবুও তারা ৯ জানুয়ারি একটি শেয়ালকে পিটিয়ে হত্যা করে। ১৩ জানুয়ারি গ্রামবাসী বিরল প্রজাতির একটি গন্ধগোকুলকে ধরে নিয়ে আসে। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটিকে উদ্ধার করি। মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চিতা বিড়াল হত্যার ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় পাঁচ-ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, আমি এ বিষয়ে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করব। যেহেতু স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়েই বন্যপ্রাণী ধরছে এবং মারছে, সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করা হবে।