× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বাণিজ্যিকভাবে রাবার চাষ, বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

ফেনী প্রতিনিধি

২১ জানুয়ারি ২০২২, ০২:১৫ এএম

১২ বছর আগে লাগানো গাছগুলো থেকে গত তিন বছর যাবত রাবার সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। এছাড়াও স্থানটি পরিচিতি পেয়েছে ফেনীর অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা রাবার বাগানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দৃশ্য দেখে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা অভিভূত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী ফেনীর পরশুরামে রাবার উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, সমতল ভূমি থেকে একটু উঁচু পাহাড়ি বৈশিষ্ট্যের এই এলাকা রাবার বাগানের জন্য উপযোগী। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের জয়স্তীনগর-বীরচন্দ্রনগর গ্রামে বিশাল এলাকাজুড়ে রাবার বাগান তৈরি করেছেন স্থানীয় হাজী মো. মোস্তফা। বাগানের মালিক সত্যনগর গ্রামের ব্যবসায়ী হাজী মো. মোস্তফা বলেন, ২০০৯ সালে ২০ একর জমিতে ১০ হাজার রাবার চারা রোপণ করেছিলাম। বর্তমানে বাগানের ৪ হাজার গাছ থেকে রাবার উৎপাদন করা হচ্ছে। রাবার সংগ্রহের জন্য গাছ উপযুক্ত হতে সময় লেগেছে দশ বছর। কয়েক বছর পর বাকি গাছগুলো থেকেও রাবার উৎপাদন শুরু হবে।

বাগানের তদারকিতে নিয়োজিত চায়ং মারমা বলেন, এখন চার হাজার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ শুরু হবে। রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে বর্তমানে ১২ জন শ্রমিক কাজ করছেন। অক্টোবর-জানুয়ারি চার মাস রাবার উৎপাদন বেশ ভালো হয়। শীতের তুলনায় বর্ষায় কম রাবার উৎপাদিত হয়। রাবার উৎপাদনের পদ্ধতি সম্পর্কে এ কাজে নিয়োজিত রনু রানী বড়ুয়া বলেন, বাগান থেকে কষ এনে শুকনো রাবার শিটে পরিণত করে তা রোলার মেশিনের সাহায্যে পানি বের করা হয়। এরপর ড্রিপিং শেডে শুকিয়ে পোড়ানো হয়।

রনু রানী বড়ুয়া বলেন, একটি গাছ থেকে দৈনিক প্রায় ৩০০-৪৫০ গ্রাম রাবার পাওয়া যাচ্ছে। বাজার দর অনুযায়ী প্রতি লিটার রাবার ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি করা যায়। তবে বর্তমানে ১২০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একটি রাবার গাছ ৩৫ বছর পর্যন্ত রাবার উৎপাদন করা যায়। প্রতি দুই-তিন মাস পর পর রাবারগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হয়। প্রতি লটে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার রাবার বিক্রি হয়।

পরশুরাম উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জানান, সাধারণত রাবার উৎপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ বিবেচনায় পাহাড় বা উঁচু স্থান যেখান থেকে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যেতে পারে, তা বেশি উপযোগী। সেই হিসেবে উপজেলার সীমান্তবর্তী জয়ন্তীনগর গ্রামে গড়া ওঠা বাগানটিও উঁচু ছোট পাহাড়ি স্থান, যা রাবার উৎপাদনের উপযুক্ত। শুধু এই এলাকা নয়, পরশুরামে এমন আরও অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে রাবার বাগান হতে পারে।

রাবার বাগানের স্বত্ত্বাধিকারী হাজী মোস্তফা বলেন, লাভের মুখ এখনও দেখা যাচ্ছে না। মাসিক দেড় লাখ টাকা খরচ হলেও তেমন লাভ হচ্ছে না। পুরোদমে রাবার সংগ্রহ শুরু হলে আশা করি, একটি ভালো অবস্থানে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। চট্টগ্রামের মেসার্স আরিফ এন্টারপ্রাইজ ইতোমধ্যে আমার বাগান থেকে রাবার কেনা শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দিন বলেন, বাগানের কষ সংগ্রহের কাজে প্রথম দিকে কক্সবাজার রামুর কর্মচারীরা কাজ করতেন। এখন আমাদের স্থানীয় লোকজনই এ কাজ করছেন। এতে গ্রামের বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাবার ছাড়াও বাগানের মাঝখানে মাছ চাষ, স্বল্প পরিসরে আম ও লিচু উৎপাদন করা হচ্ছে।

বাগান দেখতে আসা সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার সামান্তা জানান, এখানে সারিবদ্ধ গাছ, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণের দৃশ্য, কাছ থেকে ভারত সীমান্তের দৃশ্য ও প্রাকৃতিক সজীবতা আামাকে মুগ্ধ করেছে। তবে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি খারাপ থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, পাশেই ভারতের ত্রিপুরার পাহাড়ি অঞ্চলে রাবার বাগান রয়েছে। বোঝাই যায় এ অঞ্চল রাবার শিল্পের জন্য উপযোগী। যদিও রাবার বাগানের বিষয়টি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে, তারা ভালো বলতে পারবেন।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.