নতুন করে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে হাকালুকি হাওর পারের শতাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের কপালে। গত ক'দিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হাওরের পানি কমতে শুরু করেছিলো। কিন্ত মাত্র ১২ ঘন্টার ভারী বর্ষণে আবারও এশিয়ার বৃহত্তম এই হাওরের পানি দ্রুত বাড়ছে। তলিয়ে যাচ্ছে ঈদগাহ কবরস্থান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বাবু সত্যেন্দ্র চন্দ্র বৈদ্য সংবাদ সারাবেলা কে জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে সিলেট জুড়ে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। বুধবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলের সবচেয়ে বেশী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শেওলায় ১৩০ মিলিমিটার।
এছাড়া সুনামগঞ্জের ছাতকে ১২৫ মিলিমিটার,সিলেট শহর ৯৮ মিলিমিটার, জকিগঞ্জ ৭৭ মিলিমিটার, লালাখাল ৯২ মিলিমিটার, কানাইঘাট ৮৫ মিলিমিটার, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার লাতু এলাকায় ৪০ মিলিমিটার, শ্রীমঙ্গলে ৩৯ মিলিমিটার ও মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই বৃষ্টির পর থেকে সিলেটে সুরমা কুশিয়ারা সহ সকল হাওরের পানি বাড়তে শুরু করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক 'সংবাদ সারাবেলা 'কে জানান, গত ৩/৪ দিনের ভ্যাপসা গরমের পর মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়।সবচেয়ে ভারী বর্ষণ হয়েছে সিলেটে। দেশের সর্বোচ্চ ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় সেখানে । তিনি আরও জানান, সিলেটের বর্তমান বৃষ্টি এভাবে থেমে থেমে আরও কয়েকদিন চলতে পারে।
এদিকে কুলাউড়া উপজেলার অফিস আদালত ও হাসপাতালে এখনো হাটু পর্যন্ত পানি। তলিয়ে আছে অনেক ঈদগাহ কবরস্থান।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী 'সংবাদ সারাবেলা 'কে জানান, গত কদিনে পানিতো কমেছিলো। কিন্তু গত রাতের বৃষ্টিতে তা আবার বাড়ছে।
হাকালুকি হাওরের ভেতরে অবস্থিত ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির সংবাদ সারাবেলা কে বলেন এখন হাওরের পানি দ্রুত বাড়ছে। আমার ইউনিয়নের সকল ইদগাহ এমনকি অনেক মসজিদেও পানি।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা সংবাদ সারাবেলা কে জানান, জায়ফরনগর ও পপশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বেশিভাগ এলাকা প্লাবিত। এখন আবারও পানি বাড়ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় হাকালুকি হাওরের অবস্থান। কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিবেষ্টিত এশিয়ার বৃহত্তম এই হাওরের আয়তন প্রায় ৪৫ হাজার একর। হাওর পারের ২১ টি ইউনিয়নে রয়েছে ২ শতাধিক গ্রাম। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় ৫ টি নদী ও অসংখ্য ছড়া হয়ে হাওরের পানি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পিটাইটুকর হয়ে কুশিয়ারা নদীতে পতিত হয়।