নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের রাধানগর থেকে মানিকপুর সড়ক। পাহাড়ী ঢলের পানির স্রোতে নির্মাণাধীন সড়কটি ভেঙেচুরে যেন কঙ্কাল হয়ে গেছে। বেশির ভাগ অংশে পিচ, ঢালাই উঠে গেছে। স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দেখে মনে হয় এবারের বন্যার চিহ্ন পুরোপুরিভাবে সড়কটিতে থেকে গেছে। শুধু এই সড়কটিই নয়, এই বন্যার পানিতে কলমাকান্দা উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য সেতু ও কালভার্টের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলমাকান্দা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিনমাস আগে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যায়ে এমএ ওয়াহেদ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাধানগর থেকে মানিকপুর সড়কটি নির্মাণ করেন। সম্প্রতি পাহাড়ী ঢল ও ভারীবর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যার পানির স্রোতে সড়কটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে গত দু’সপ্তাহ ধরে ওই সড়কে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল ছাড়া সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে মানিকপুর, রাধানগর, রাজনগর, জয়নগর, দীঘিনাথপাড়া, শিবপুর, বিয়ানীপাড়া, ফালভাঙাসহ অন্তত ২০ টি গ্রামের মানুষ চরমদুর্ভোগে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে রাধানগর থেকে মানিকপুর সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। সড়টির প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি পাহাড়ী ঢলের পানির স্রোতে সড়কটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু এই সড়কই নয় এ বন্যায় উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রামীণ সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
লেংগুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়া বলেন, পাহাড়ী ঢলে ইউনিয়নের সব সড়কই ভেঙেচুরে গেছে। এই বন্যায় পানির উচ্চতা যেমন বেশি ছিল, তেমনি পানিতে স্রোতও ছিল অনেক বেশি। এ কারণে ক্ষতিও বেশি হয়েছে। এসব সড়ক দ্রুত সংস্কার করা না হলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
কলমাকান্দা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী বলেন, তাদের অধীনে উপজেলায় ৩১৫.৫৬ কিলোমিটার সড়ক আছে। এখন পর্যন্ত যে হিসাব পেয়েছেন, সে অনুযায়ী বন্যায় উপজেলায় প্রায় ১২৫ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬টি। তাছাড়া উপজেলায় এখনো বিভিন্ন এলাকায় অনেক সড়ক পানির নিচে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পরই ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।