× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ডালের বাজারে অস্থিরতা, আটা নিয়েও শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ মে ২০২২, ২২:৩২ পিএম

সম্প্রতি এক মুদি দোকান তোলা থেকে কয়েক রকম ডালের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না। ঈদের আগে সয়াবিন তেলের সংকট দিয়ে বাজারের এই অস্থিরতা শুরু হয়। নতুন মূল্যে ভোজ্যতেলের সরবরাহে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিলো। কিন্তু এখন ডালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় কিছু ডাল পাওয়াই যাচ্ছে না। আবার আটার দামও বাড়ছে অস্বাভাবিক গতিতে। সবমিলিয়ে ভোক্তারা নাজেহাল অবস্থায় পড়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আটা আমদানি নির্ভর পণ্য হওয়ায় এর দাম বেশি বাড়ছে। কেননা, ভারত সম্প্রতি গম রপ্তানি বন্ধ করা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তা নিয়ে বাজার অস্থিতিশীল রয়েছে। সেটার প্রভাব আটার বাজারে পড়েছে।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবেই গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আটার দাম ২৫ শতাংশ এবং এক মাসের ব্যবধানে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। খুচরায় প্রতি কেজি প্যাকেট ও খোলা আটা দুটোই এখন প্রতিকেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে গমের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার পরেই আটার দাম বাড়তে শুরু করেছে।

আর মুগ ও মসুর ডাল, ডাবলিসহ নানা জাতের ডালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে অন্তত ১০ টাকা।

টিসিবির হিসেবে অনুসারে, মসুর ডালের দাম গত এক বছরে মোটা দানা ৫৩ শতাংশ, মাঝারি দানা ৪১ শতাংশ এবং ছোট দানা ২১ শতাংশ বেড়েছে। আর অ্যাংকর বা ডাবলির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ শতাংশ।

নিত্যদিনের খাবার তালিকায় থাকা ডাল ও আটা উভয়েরই দাম বাড়তে থাকার পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

একই সাথে গত কয়েক মাস থেকে ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে। এ কারণেও এ দুই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

গতকাল শুক্রবার (২০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ১০০ টাকা এবং আগের সপ্তাহে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

গত কয়েক বছর ধরে মোটা দানার মসুর ডাল প্রতিকেজি ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায় মিলছিল। দেশি ও নেপালি সরু দানার মসুর ডালের দাম এখন প্রতিকেজি ১৩০ টাকা, যা একমাস আগেও ১২০ টাকায় পাওয়া যেত।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের পাইকারি দোকান, পীরেরবাগের খুচরা দোকানে ডাবলি বা অ্যাংকর ডালের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অ্যাংকর ডাল চাইলে উল্টো বুটের ডাল নেওয়ার পরামর্শ দেন দোকানিরা।

পীরেরবাগের দোকানি বিল্লাল হোসেন জানালেন, গত এক সপ্তাহে মোটা দানার মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে। সরু মসুর ডালের দামও কিছুটা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য পাইকারি বাজার থেকে মসুর ডাল কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন তিনি।

ডালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ বলেন, ‘এখন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডালের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে।’

এ বছর দেশে মসুর ডালের উৎপাদন খুব কম হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘গ্রামের কৃষকদের কাছে ডাল থাকলেও তারা এখন বিক্রি করছেন কম।’

পুরান ঢাকায় ডালের পাইকারি বিক্রেতা রাজ্জাক বাণিজ্য বিতানের প্রতিষ্ঠাতা চুন্নু হাজি বলেন, ‘অ্যাংকর বা ডাবলি ডালের কোনো যোগান নেই। এই ডালের দাম আরো বাড়বে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইউক্রেইন থেকে আসে এ ডাল।’

এই ‘সুযোগে’ দেশে উৎপাদিত মুগ ডালের দামও কেজিপ্রতি অনেক বেড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মুগডালের পাইকারি মূল্য এখন ১১০ টাকা থেকে ১১২ টাকার মধ্যে। মুগডালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তারপরেও কেন বাড়লো, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। গত ১০ দিনে মুগডালের দামও কেজিতে অন্তত ১০ টাকা করে বেড়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে দেশে গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় আটা-ময়দার বাজারও সমান্তরালে চড়তে শুরু করেছে।

এর সাথে যোগ হয়েছে হঠাৎ করে ভারতের গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা। চলতি সপ্তাহে এটিকেই ‘সুযোগ’ হিসেবে নিয়ে আরেক দফা দাম বাড়ানো হয়েছে। কেননা যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানি বন্ধ। সর্বশেষ দুই মাস গম এসেছে প্রতিবেশী ভারত থেকেই।

বাজারে এখন প্যাকেট আটা ও খোলা আটা দুটোই প্রতিকেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬৫ টাকায়।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আটার দাম ২৫ শতাংশ, এক মাসের ব্যবধানে ৩০ শতাংশ এবং এক বছরের ব্যবধানে ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। আর ময়দার দাম এক মাসের ব্যবধানে ১৮ শতাংশ এবং এক বছরের ব্যবধানে ৭৮ শতাংশ বেড়েছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.