× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নিত্যপণ্যের দামের আগুনে দগ্ধ সবার মন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জুন ২০২২, ০০:৩৫ এএম

রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তোলা ছবি। ছবি: সংগৃহীত

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার গ্যাঁড়াকলে পড়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়ি পাটিয়ে দিচ্ছেন। পরিবারের আয় উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি শুধু কর্মস্থলের শহরে অবস্থান করছেন।

দামের ঘোড়া শপথ করেছে, তার মাথা কেউ নোয়াতে পারবে না। গত এক বছরে চাল ও সয়াবিন তেল থেকে শুরু করে সব দ্রব্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ক্রেতারা এর চাপে একদম নুয়ে গেছেন। নিত্যপণ্যের দামের আগুনে পুড়ে ক্ষত সবার মন। যেন কেউ দেখার নেই, বলার নেই। 

আজ চাল তো কাল সবজি, পরশু ভোজ্যতেল কিংবা পেঁয়াজ- দাম বাড়ার গোলকধাঁধা থেকে কোনোভাবেই যেন বের হতে পারছে না স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সংসার চালাতে গিয়ে বারবার হোঁচট খাচ্ছেন তারা।

এদিকে বাজারে দামের পাগলা ঘোড়া থামাতে সরকারের শুল্ক ছাড়, বাজার তদারকি, আমদানির উদ্যোগ- এসব কোনো কিছুই কাজে আসছে না। বন্যা, বিশ্ববাজার ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া- এমন সব রকমারি ছুতোয় একের পর এক বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। কেউ পণ্য কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। কেউ কেউ খরচের চোটে পুরো পরিবারকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামে। 

এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের কেজি ৬৮ থেকে ৭২ টাকা, বিআর-২৮ জাতীয় চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৮, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। নিম্ন আয়ের মানুষ সাধারণত মোটা চাল খান বেশি। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতীয় চাল ৫০ থেকে ৫৫ এবং পাইজাম ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, সরু চাল বিক্রি হচ্ছে (নাজিরশাইল-মিনিকেট) ৬৪ থেকে ৮০ টাকায়। এক মাস আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬৮ টাকা। অর্থাৎ এক মাস না যেতেই সরু চালের দাম বেড়েছে ছয় থেকে ১২ টাকা। মাঝারি চালের (পাইজাম-লতা) দাম বেড়েছে চার থেকে ছয় টাকা। মোটা চালের (স্বর্ণা-চায়না ইরি) দামও বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ বলেন, বন্যায় ক্ষতি ও সরবরাহে সমস্যা হওয়ার কারণে দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি বস্তায় চালের দাম নতুন করে বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে বেশি। সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে ত্রাণ দেওয়ার জন্য মানুষ মোটা চাল কিনছে বেশি। এ কারণে এই মানের চালের দাম বেড়েছে।

রাজধানীর বাজারগুলো লক্ষ্য করে দেখা গেছে, বাজারে শুধু পেঁপে আর ঢ্যাঁড়শ ছাড়া কোনো সবজিই ৫০ টাকার কমে মিলছে না। অন্য সবজির মধ্যে কোনোটির দাম ২০০ টাকায় ঠেকেছে। বাজারে পেঁপের কেজি ৩৫ থেকে ৪৫ আর ঢ্যাঁড়শ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১০০, শসা ৭০ থেকে ৮০, করলা ৬০ থেকে ৭০, বরবটি ৭০ থেকে ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৫৫, মরিচ ৭০ থেকে ৮০, গাজর ৮০ থেকে ১৪০, কাঁকরোল ৫৫ থেকে ৬০, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, ধুন্দুল ও ঝিঙে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো কিনতে হলে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা।

মহাখালী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ইব্রাহীম বলেন, বন্যায় সবজি নষ্ট হওয়ায় বাজারে আগের চেয়ে কম আসছে। এ কারণে গত এক সপ্তাহে সব সবজি কেজিতে প্রায় ২০ টাকা করে বেড়েছে।

এদিকে, এক-দুই টাকা করে গত আট থেকে ১০ দিনে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, যা এতদিন বিক্রি হয়েছে ২০ টাকার মধ্যে। আলুর দাম বাড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না খোদ খুচরা ব্যবসায়ীরাও। আর প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা এলাকার আলু বিক্রেতা সজিব হোসেন বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই কয়েক দিন ধরে পাইকারি বাজারে আলুর দাম বাড়ছে। পাইকারি কিনতে হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। ফলে খুচরা বাজারেও বেড়েছে।

দামের গতি যে হারে বেড়েই চলেছে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বাজেটে কর ও ভ্যাট নিয়ে যেসব প্রস্তাব রয়েছে, তাতে সামনে আরো সমস্যায় পড়তে হবে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষদের। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকারের আরো কার্যকর ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.