× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সেতু আছে সড়ক নেই, স্থানীয়দের ক্ষোভ

আবুল হাসনাত অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৮ পিএম । আপডেটঃ ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫২ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর-আশুগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। তবে, প্রস্তাবিত সড়কটি তৈরি হওয়ার আগেই বেশ কিছু সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করায় গত তিন বছর ধরে সেতু ও কালভার্টগুলো যেন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 

ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা, ঠিকাদারের অনিয়ম এবং প্রকল্প প্রণয়ন কমিটির ভুলের কারণে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর-আশুগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ। এতে ক্ষোভের যেন শেষ নেই স্থানীয়দের। এদিকে, সড়ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ হবে।   

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি একনেকে পাশ হওয়ার পর ২০১৮ সালের ১ জুলাই মেঘনা-তিতাস ও পাগলা নদীর কোল ঘেঁষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর-আশুগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক বিভাগ। প্রকল্পের সময়সীমা অনুযায়ী ২০২১ সালের জুন মাসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা, ঠিকাদারের অনিয়ম এবং প্রকল্প প্রণয়ন কমিটির ভুলের কারণে মাঝ পথে থমকে যায় সড়কটির নির্মাণ কাজ। 

প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প ব্যয় মোট ৪২১ কোটি টাকা ধরা হলেও সম্প্রতি ভূমি অধিগ্রহণর নামে তৃতীয় দফায় থমকে থাকা সড়কটির নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয় আরো ১৮৩ কোটি টাকা। এতে সর্বশেষ প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ৬০৪ কোটি টাকা। অপর দিকে, সড়টি নির্মাণের আগেই ২০ কিলোমিটার পথে পাগলা ও তিতাস নদীর ওপর ২টি বড় সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক নির্মাণের আগেই ৯টি মাঝারি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় সেতু ও কালভার্টগুলো জমির ওপর কেবল দৃশ্যমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়দের দাবি, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি নির্মাণ কাজ যেন অতিসত্তর শেষ করা হয়।

নবীনগর উপজেলার বাইশমৌজা এলাকার মো. তাজুল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকার কারণে গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। এখানে ব্রিজ আছে তবে রাস্তা নেই। মানুষ পায়ে হেঁটে কষ্ট করে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। যদি এখানে রাস্তাটা নির্মাণ শেষ করে দেয় তাহলে অনেক উপকার হবে।  

গাজীরকান্দি গ্রামের মো. সাজন মিয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রামের ভেতর দিয়ে মোটরসাইকেল যাওয়ার রাস্তা নেই। অথচ এখানে না কি ফোর-লেন রাস্তা হবে। রাস্তার কোনো খোঁজ নেই, অনেকগুলো ব্রিজ নির্মাণ করে রেখেছেন। আমাদের দাবি, এই রাস্তার কাজ যেন দ্রুত করা হয়। তাহলে আমরা সহজেই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারব।’

হাজেরা বেগম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, রাস্তা না থাকায় ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার অনেক কষ্ট হচ্ছে। পায়ে হেঁটে তাদের চলাফেরা করতে হয়। রাস্তা না হওয়ার আগেই ব্রিজ করে ফেলেছে। এই ব্রিজ এখন আমাদের কোনো কাজেই আসছে না।

এ দিকে দুই উপজেলার প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের স্বপ্নের এই সড়কের নির্মাণ কাজে ধীরগতির জন্য সচেতন মহল প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের গাফলতি এবং প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির কারসাজিকেই দায়ী করছেন। 

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়ন পরিষদ এর সভাপতি মো. আহসান উল্লাহ হাসান বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবের টার্গেট নিয়ে নির্ধারিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর-আশুগঞ্জ নির্মাণাধীন রাস্তাটি প্রায় ৫ বছর ধরে ঝুলে আছে। যারা প্রাথমিকভাবে রাস্তার জন্য ব্যয় ধরেছেন তারা ভূমি অধিগ্রহণের বাজারদর না জেনেই এই ব্যয় ধরেছেন। তাই এখন প্রকল্পের কাজ যেমন দেরী হচ্ছে, সেই সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয়ও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘সড়কটি নির্মাণের জন্য ঠিাকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। ঠিকাদার সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় আগের যে ভূমি অধিগ্রহণ করা ছিল সে জায়গা এবং যেখানে রাস্তা ছিল সেখানে কাজ করার সুযোগ ছিল। ঠিকাদার তার সময় বাড়ানোর কোনো আবেদন না করায় আমরা সেটির দরপত্র বাতিল করে দিয়েছি। আমরা পরবর্তীতে নতুন দরপর আহবান করেছি। সেটির মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুণরায় দরপত্র আহ্বানসহ নতুন ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুত সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।’ প্রায় ২০ কিলোমিটারের সড়কটিতে ২টি বড় সেতু, ৭টি মাঝারি সেতু এবং ১৩টি কালভার্ট রয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.