× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল

এখনও শোনা যায় তার কণ্ঠস্বর

সংবাদ সারাবেলা ডেস্ক

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:২০ পিএম । আপডেটঃ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৬ পিএম

আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। এই নামের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চারিত হয় দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প তকমাটি। একজন লেখিকা এবং পরিসংখ্যানবিদও তিনি। ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্সে জন্মগ্রহণ করেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। তার বাবা উইলিয়াম এডওয়ার্ড নাইটিঙ্গেল এবং মা ফ্রান্সিস নাইটিঙ্গেল।

নাইটিঙ্গেল তার কর্মজীবনে ‘নার্সিংক’  বেছে নিয়েছিলেন শুধুমাত্র পেশা হিসেবে নয়, মূলত সেবা হিসেবে।

তার জন্মদিনটি ১৯৭৪ সাল থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে’ হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্মগ্রহণ করায় তার পিতা কন্যার নাম রাখেন ফ্লেরেন্স। আর সঙ্গে বাবার নাইটিঙ্গেল নামটি জুড়ে তার নাম হয় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল।

বাবার আগ্রহ ও অনুপ্রেরণায় তিনি মানবতাবাদী লেখক এবং পরিসংখ্যানবিদ হয়েছিলেন। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ছোট বেলা থেকেই মানব সেবার নিবেদিত ছিলেন। কেউ অসুস্থ হলেই ছুটে যেতেন তার সেবা করতে। ফ্লোরেন্স প্রথমবারের মতো যখন লন্ডনে যান, সে সময় তার বয়স ১৭ বছর। সে সময় লন্ডনের হাসপাতালগুলোর অবস্থা ছিল খুবই করুণ। এর অন্যতম কারণ সে সময়ে কেউ সেবিকার কাজে আগ্রহী ছিলেন না। ওই সমাজে সেবিকার পোশাকে খুব ছোট করে দেখা হতো। 

সেই সময় উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও ফ্লোরেন্স তখন নিজেকে একজন সেবিকার পেশায় নিয়োজিত করেন। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে স্রষ্টা তাকে সেবিকা হওয়ার জন্যই পাঠিয়েছেন। প্রথমে এ কাজে আগ্রহ প্রকাশ করলে মা-বাবা রাজি হননি এই ভেবে, একজন শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে তার যে কোনো ভালো পেশায় যাওয়া উচিত। আশা ছাড়েননি ফ্লোরেন্স। অবশেষে বাবা-মায়ের অনুমতি মিললে তিনি ১৮৫১ সালে নার্সের প্রশিক্ষণ নিতে জার্মানিতে চলে যান।

এই পেশাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ১৮৫৫ সালে তিনি নার্স প্রশিক্ষণের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি ‘রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির’ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছর তিনি নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৪৫ হাজার পাউন্ড তহবিল সংগ্রহ করেন। ১৮৬০ সালে লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে নার্সিংকে সম্পূর্ণ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি ‘নাইটিঙ্গেল ট্রেনিং স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন । বর্তমান এটি ‘ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্কুল অব নার্সিং' নামে পরিচিত।

ডা. এলিজাবেথ ব্ল্যাকওয়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ১৮৬৭ সালে নিউইয়র্কে চালু করেন ‘উইমেন্স মেডিকেল কলেজ’।

১৮৫৩ সালে শুরু হয় ক্রিমীয়ার যুদ্ধ। এ যুদ্ধে অনেক সৈনিক আহত হয়। সে সময় যুদ্ধাহতদের সেবায় ফ্লোরেন্স আত্মনিবেদন করে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

আহত সৈন্যদের সেবার মাধ্যমে নার্সিংকে তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। হ্যারিকেন নিয়ে রাতের আঁধারে তিনি ছুটে যেতেন আহতদের দ্বারে দ্বারে। সেই থেকেই বিশ্ব তাকে ‘দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ ডাকতে শুরু করে। যুদ্ধের পর ফ্লোরেন্স বহু দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৮৮৩ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া তাকে ‘রয়েল রেডক্রস’ সম্মানে সম্মানিত করেন। ১৯০৭ সালে প্রথম নারী হিসেবে ‘অর্ডার অব মেরিট’ সম্মানে সম্মানিত হন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। এর পরের বছর ১৯০৮ সালে তিনি লন্ডনের ‘অনারারি ফ্রিডম’ উপাধি অর্জন করেন।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণাও করেছেন। ভারতীয় উপমহাদেশে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। এই নারীর

জীবনী নিয়ে ১৯১২, ১৯১৫, ১৯৩৬ ও ১৯৫১ সালে চারটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। ১৯১০ সালের ১৩ আগস্ট ৯০ বছর বয়সে এই মহীয়সী নারী পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান। 

কিন্তু ফ্লোরেন্সের কণ্ঠস্বর এখনও শোনা যায়। ব্রিটিশ লাইব্রেরি সাউন্ড আর্কাইভে সংরক্ষিত রয়েছে তার কণ্ঠস্বর। যা আজও নাসিংসেবায় অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে। যেখানে তিনি বলেছেন- যখন আমি থাকব না, সেই সময় আমার এই কণ্ঠস্বর আমার কাজগুলোর কথা মানুষকে মনে করিয়ে দেবে এবং এসব কাজের জন্য উৎসাহ জোগাবে। ১৯১০ সালের ১৩ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.