× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রায়পুরায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন, ভালো দামে কৃষকের হাসি

আল আমিন, রায়পুরা (নরসিংদী)

২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫১ পিএম

নরসিংদীর রায়পুরায় বিস্তীর্ণ চর-জুড়ে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই কেবল দিগন্ত জোড়া সবুজ-হলুদ সংমিশ্রণে চৈত্রের বাহারী মৌসুমী ফল বাঙ্গি চাষের সমারোহ। পবিত্র রমজান থাকায় বাঙ্গির চাহিদা বেশ আগাম ফলন ও দামে সন্তুষ্ট চাষিরা। স্থানীয় কৃষকেরা কম পুঁজিতে অধিক ফলণ ও দাম পাওয়ায় প্রতি বছরই এখানকার চাষিরা বাঙ্গি চাষাবাদে ঝুকছেন। বাঙ্গির বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি ঝিলিক।

জানা গেছে, এখান থেকে নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাইকাররা বাঙ্গি কিনে রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলা সদরের বাজারে সরবরাহ করেন। বাঙ্গি একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। তীব্র গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখে বাঙ্গি। তীব্র গরম আর রমজান মাসে সারাদিন রোজা থাকার পর শরীরের ক্লান্তির ছাপ মুছতে অনেকের ইফতারে বাঙ্গির চাহিদা থাকে বেশ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ জুড়ে সুভা পাচ্ছে বাঙ্গি খেত। বাঙ্গি গাছের লতা পাতায় ফুলে ফলে ছেয়ে গেছে। অনেকে জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত। পরিপক্ব কাঁচা-পাকা বাঙ্গি তোলে জমির লাইলে সারিবদ্ধ করে রাখেন। 

আগাম ভালো দামে পরিপক্ক বাঙ্গি খেত থেকে সংগ্রহ করে খাঁচায় ভরে মাথায় করে বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা।

জেলার বিভিন্ন বাজারগুলোতে এখনো বাঙ্গির জমজমাট হাট না বসলেও কিছু কিছু বাজারে বাঙ্গি বিক্রি চোখে পড়ছে। দামও বেশ চড়া এগুলো তারা প্রতি পিছ ১শ ৫০ থেকে ২শত টাকা মুল্যে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের বাঁশগাড়ি ও পাড়াতলীর মধ্যনগর চরে চলতি মৌসুমে ৩৩ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। এখানকার চরের দোঁআশ মাটিতে বেলে ও দোঁআশ দুই জাতের বাঙ্গির চাষাবাদ হয়েছে। এ জাতের বাঙ্গির খোসা পাতলা, শাঁস নরম ও মিষ্টি কিছুটা কম। এঁদেল বাঙ্গি শাঁস শক্ত তবে বেশ মিষ্টি। এছাড়াও বিস্তীর্ণ এ চরে বাঙ্গির পাশাপাশি রসুন, মরিচ ও মিষ্টি কুমড়াও প্রচুর চাষ হয়। 

কৃষক ইসমাইল জানান, ৫৫ শতক জমিতে বাঙ্গি আবাদে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। বাঙ্গি বিক্রি করতে পারবেন দেড় লাখ টাকা। এতে তাঁর খরচ বাদে বেশ টাকা আয় হবে। জমিতেই পাইকারী প্রতিপিচ বাঙ্গি ৯০ থেকে ১শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষক সুজন মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ করতে পারবো।

আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গেলো বছর একই জমিতে তিনি ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করে বাঙ্গির চাষ করে তা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এবার ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো আশায় বুক বাঁধছি।

পাইকারি ক্রেতা মজনু মিয়া বলেন, খেত থেকে বাঙ্গি পাইকারি ৯০ টাকা দরে এক’শ পিস বাঙ্গি সাড়ে ৯ হাজার টাকায় কিনে নিলাম। 

এ ছাড়াও লেবার গাড়িভাড়াসহ আনুমানিক ২৫-৩০ টাকা খরচ রয়েছে।

পায়কারি ক্রেতা মোরশেদ মিয়া জানান, তারা এবছর প্রতি ১০০ পিস বাঙ্গি ৯ হাজার টাকায় কৃষকের জমি থেকে ক্রয় করছি। জমি থেকে ক্রয় করার পর এগুলো বাজারে নেওয়ার আগে মজুরি ও গাড়ি ভাড়া সহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে প্রতি পিসে ২৫-৩০ টাকা খরচের পর লাভের চিন্তা কেমনে কি করি।

বিভিন্ন পায়কারি ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পায়কার ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকদের জমি থেকে বাঙ্গি ক্রয় করে এগুলো নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকার বাজার ও আশেপাশের অন্যান্য হাট বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করে। এতে তাদের প্রতি বাঙ্গিতে সব মিলিয়ে ৫ টাকা লাভ হলেই সন্তুষ্ট। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে প্রায় ৩৩ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। যা হতে প্রায় ৭শ মেট্রিক টন বাঙ্গি পাওয়া যাবে। এতে শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় বাজারেও বাঙ্গির ভালো চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কম সুগার থাকায় ইহা ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাঙ্গি চাষেদের নিয়মিত উৎসাহ এবং পরামর্শ দিচ্ছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.